হরিশ্চন্দ্রপুরঃ কাকার টোটোটি খুব শখের ছিল সাত বছরের ওয়াসিমের। সেই টোটোই শেষ পর্যন্ত প্রাণ কাড়ল তার। মঙ্গলবার মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার এলাকার সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছত্রক গ্রামে। খেলার সময় চার্জে থাকা টোটোয় উঠে যায় ওয়াসিম। সেখানেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তার। বুধবার ময়নাতদন্তের পর তার দেহ গ্রামে ফিরে আসলে কান্নার শব্দে ভারি হয়ে ওঠে এলাকার বাতাস। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত কাকা পালাতক। ওয়াসিমের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের লোকেরা। বাবা ফিরদৌস আনসারি পরিযায়ী শ্রমিক। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে দিল্লি থেকে বাড়ি ফিরছেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত বালকের নাম ওয়াসিম রেজা (৭)। গতকাল তার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেলে পাঠানো হয়। তবে তার পরিবারের তরফে এখনও পর্যন্ত থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।’
স্থানীয় বাসিন্দা এবং ওয়াসিমের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, টোটোচালক রোজ আলি প্রতিদিন নিজের বাড়ির জানালা থেকে বিদ্যুতের তার টেনে উঠোনে টোটো চার্জ করতেন। বারবার বারণ করা সত্ত্বেও তিনি কর্ণপাত করেননি। সোমবারের হালকা বৃষ্টিতে টোটো ভিজে ছিল। এদিন টোটোর ব্যাটারিতে চার্জ দিলেই গোটা গাড়িটি শর্ট সার্কিট হয়ে যায়। কাকার অসাবধানতার জন্যই ওয়াসিমের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ওয়াসিম স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে পাশের উঠোনে রাখা কাকার টোটোয় উঠে খেলছিল। তখন টোটো চার্জে দেওয়া ছিল। খানিক বাদেই ওয়াসিম বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এক প্রতিবেশী বিষয়টি দেখতে পান। তিনি ছুটে গিয়ে ওয়াসিমের মাকে গোটা ঘটনা জানান। তার মা ও পরিবারের লোকেরা ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে চিকিৎসকরা ওয়াসিমকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওয়াসিমের মা কাশমেরী খাতুন বলেন, ‘আমার দুই ছেলে। ওয়াসিম ছোট। তুলসীহাটায় একটি নার্সারি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করছিল। গত তিনদিন সুলতাননগরের কুশল গ্রামে দাদুর বাড়িতে ছিল। মঙ্গলবার বাড়ি ফিরে আসে। সকালে স্কুল যায়। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে উঠোনে খেলছিল। তখনই এই দুর্ঘটনা।’ হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি মনোজিৎ সরকার বলেন, ‘গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’