রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: প্রায় প্রতি রাতেই শিলিগুড়ির ইস্টার্ন বাইপাস (Siliguri eastern bypass) এলাকায় চলে আসছে হাতি। কখনও কারও বাড়িতে ঢুকে পড়ছে, তো কখনও পচা সবজির লোভে চলে যাচ্ছে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের দিকে। ঘন কুয়াশায় বারবার লোকালয়ে হাতি (Elephant) চলে আসায় উদবিগ্ন বন দপ্তর (Forest department)।
বাইপাসে হাতি চলে আসায় যে কোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন বনকর্তারা। কারণ রাতে বাইপাসে বড় বড় লরি, ডাম্পার যাতায়াত করে। তাই দুর্ঘটনা ঘটলে গাড়ির যেমন ক্ষতি হবে, তেমন হাতিরও আহত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। তাই পরিস্থিতি মোকাবিলায় শিলিগুড়ি পুলিশের (Siliguri police) সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইছে বন দপ্তর। মধ্যরাতে ইস্টার্ন বাইপাসের দিকে যে সমস্ত গাড়ি আসছে, সেসব গাড়ির চালকদের আগেই সতর্ক করে দেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে আবেদন জানানো হবে। প্রয়োজনে যৌথ উদ্যোগেও কাজ করা হতে পারে।
মঙ্গলবার রাতেও একটি হাতি ইস্টার্ন বাইপাস এলাকায় চলে আসে। খবর পেয়েই বনকর্মীরা এসে দ্রুত পটকা ফাটিয়ে হাতিটিকে জঙ্গলে ফেরত পাঠান। সারুগারার রেঞ্জ অফিসার স্বপনকুমার রাউতের বক্তব্য, ‘মঙ্গলবার রাতে আমাদের গাড়ি আগে থেকেই এলাকায় ছিল। তাই দ্রুত জঙ্গলে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে হাতিটিকে। তবে রাস্তায় হাতি চলে এলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।’
হঠাৎ ওইখানে হাতির উপদ্রব কেন? বনকর্মীরা দুটি কারণ দেখছেন এর পেছনে। প্রচণ্ড কুয়াশায় দিকভ্রষ্ট হয়ে হাতিগুলি লোকলয়ে ঢুকে পড়তে পারে বলে তঁাদের সন্দেহ। আবার ডাম্পিং গ্রাউন্ডের (Dumping ground) উচ্ছিষ্ট খাবারের লোভের বিষয়টিও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অনেকে মনে করছেন, একবার ওই খাবারের স্বাদ পেয়ে যাওয়ায় রোজই সেই পথ মাড়াচ্ছে হাতি। আর এতেই চিন্তা বাড়ছে বন দপ্তরের। কারণ ডাম্পিং গ্রাউন্ডে আসতে হলে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে বাইপাস পার হতে হচ্ছে হাতিকে। কুয়াশার মধ্যে এমনিতেই সামান্য দূরের জিনিস বোঝা যায় না। আর দ্রুতগতিতে চলা ট্রাক, লরির সঙ্গে যদি কোনওভাবে হাতির সংঘর্ষ হয়, তবে মস্ত বিপদ।
আগে রাতে ওই এলাকায় বন দপ্তরের একটি গাড়ি টহল দিত। কিন্তু পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে এখন তিনটি গাড়ি রাখা হচ্ছে। বন দপ্তর সূত্রে খবর, রাত একটার পর হাতিগুলি লোকালয়ের দিকে আসার চেষ্টা করে। তাই ওই সময়ের পর যাতে ইস্টার্ন বাইপাসে গাড়ির গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেই বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করার প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে।