ইটাহারঃ ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদের জেরে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম হন ইটাহারের দম্পতি। উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় তাঁর। শনিবার তাঁর দেহ হাটগাছি সংলগ্ন বৃন্দাবাড়ি গ্রামে ফিরতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে পুলিশের ও আধাসেনার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ তিনজনকে আটক করলেও আদালতে তোলা হয় একজনকে। পুলিশ সুপার মহম্মদ সানা আখতার জানান, ‘খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মোট তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।’
ঘটনা সম্পর্কে জানা গিয়েছে, ৯ এপ্রিল ইটাহারের হাটগাছি সংলগ্ন বৃন্দাবাড়ি গ্রামে মহম্মদ শাহিন আখতার ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করেছিলেন। এরপরেই স্থানীয় দুষ্কৃতীরা তাঁকে মারতে শুরু করে। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম হন বাবা সেকেন্দার আলি (৩৫) ও মা আরজেনা বিবি (৩২)। তাঁদের আশঙ্কজনক অবস্থায় প্রথমে গ্রামীণ হাসপাতাল, পরে রায়গঞ্জ মেডিকেলে রেফার করা হয়। দুজনের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হওয়ার জন্যই ওই দম্পতিকে রেফার করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে।
জখম কিশোর জানান, ‘স্থানীয় দুষ্কৃতীরা আমার বোনকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি করে। আমি প্রতিবাদ করলে মারধর করে। আমার মা-বাবাকেও ধারালো বস্তু দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুনের চেষ্টা করে। উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে চিকিৎসা চলছিল বাবার। শনিবার সকালে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যু হয়। আমরা ইটাহার থানায় ১৫ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।’
এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বাতাসু শেখকে। তার বাড়ি ইটাহারের হাটগাছি পঞ্চায়েতের ধুলোহর গ্রামে। রবিবার ধৃতকে রায়গঞ্জ মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হলে বিচারক দুইদিনের পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দেন। সরকারি আইনজীবী পিন্টু ঘোষ জানান, ‘ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিচারক তদন্তের স্বার্থে পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।’
ইটাহার থানার পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘গতকাল সন্ধ্যায় শিলিগুড়ি থেকে ওই ব্যক্তির দেহ আসতেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তপ্ত থাকায় দুটি পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করেছে ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা। ঘটনার তদন্ত চলছে।’