মালদা: ২০০৮ সাল থেকে তিনি রাজনীতির ময়দানে নেই। কিন্তু ভোটের মুখে চায়ের দোকান থেকে পার্টি অফিস, তাঁর নিজের দল, বিরোধী দল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষজন, উত্তর মালদা লোকসভা কেন্দ্রে আজও তিনি চর্চায়। তিনি প্রয়াত প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি। কংগ্রেস কর্মী থেকে শুরু করে সাধারন মানুষের কাছে যিনি প্রিয়দা।
২০০৯ সালে আসন পুনর্বিন্যাসের আগে বর্তমান উত্তর মালদা লোকসভা কেন্দ্রের হবিবপুর এবং মালদা বিধানসভা কেন্দ্র ছাড়া বাকি এলাকাগুলি ছিল রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। ১৯৯৯ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এই কেন্দ্রে সাংসদ ছিলেন প্রিয়রঞ্জন। সামলেছিলেন মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর, মালতীপুর সহ বিভিন্ন এলাকায় স্কুলের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, রাস্তা, পানীয় জল, আলো থেকে শুরু করে একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছিল তাঁর আমলে। চাঁচল স্টেডিয়ামের কাজও শুরু করেছিলেন তিনি।যদিও সেই কাজ এখনও অসম্পূর্ণ। চাঁচলকে দেখিয়েছিলেন রেললাইনের স্বপ্ন । কেন্দ্রের মন্ত্রিত্ব সামলানোর পরেও এলাকায় যথেষ্ট সময় দিতেন। সংযোগ রাখতেন মানুষের সঙ্গে। জননেতা হিসাবে অর্জন করেছেন মানুষের ভরসা । তাই মালদা কেন্দ্রে যেমন ছিলেন গনি খান, রায়গঞ্জে ছিলেন প্রিয়রঞ্জন।
এবার প্রশ্ন হল, প্রিয় মিথ কি এখনও কাজ করবে উত্তর মালদায়? ভোটারদের মতে, প্রিয়দা মানুষের মনে থেকে গেছেন। তাঁর করে যাওয়া কাজের প্রভাব ভোট বাক্সেও পড়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে কংগ্রেসের অন্যান্যরা প্রিয়রঞ্জনের মতো মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠতে পারেননি। তাই মনের মণিকোঠায় প্রিয় থাকলেও ভোট বাক্সে কংগ্রেস তার ফায়দা তুলতে পারছে না। যদিও কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, উনিশের ভোটে মৌসমের দলবদল মানুষের মধ্যে ভুল বার্তা দিয়েছিল। প্রিয় মিথ এখনও অক্ষুন্ন উত্তর মালদায়। মানুষ এবার সেটা ফের বুঝিয়ে দেবে।
আসন পুনর্বিন্যাস এবং প্রিয়রঞ্জন অসুস্থ হওয়ার পর উত্তর মালদায় কংগ্রেস থেকে টানা দুবার সাংসদ হয়েছেন মৌসম। যার পিছনে গনি ও প্রিয় মিথ দুটোই কাজ করেছিল। কিন্তু মৌসমও বদলে গিয়েছেন। এবার কংগ্রেস প্রার্থী মোস্তাক কি মানুষের কাছে প্রিয়র বিকল্প হয়ে উঠতে পারবেন? সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।
কংগ্রেস প্রার্থী মোস্তাক বলছেন, ‘একদিকে বিজেপিকে হারাতে রাহুল গান্ধি এবং কংগ্রেসের লড়াই, অন্যদিকে গনি খান ও প্রিয়রঞ্জন আবেগ, সবটাই প্রতিফলিত হবে ভোট বাক্সে।’