ফালাকাটা: ‘ভোটের বাজার প্রচুর গরম আইসা পড়ছি আবারও/নোট মিলব করকরা ভালো-মন্দ খাবারও…’ ভোটে খাওয়াদাওয়া থেকে টাকা বিলানোর অভিযোগ নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধেই ভোটের সময় এমন অভিযোগ সামনে আসে। ফালাকাটায় (Falakata) অবশ্য এমন অভিযোগ এখনও পর্যন্ত ওঠেনি। কোনও রাজনৈতিক দলই ভোটের বাজার তেমন গরম করতে পারেনি। প্রচারে ঝড়ও ওঠেনি অন্য এলাকার মতো। কিন্তু তাই বলে কি হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন র্যাপাররা? পেশাদার র্যাপার না হলেও ফালাকাটার ‘ভোটের বাজার’ গরম করতে তাঁদের র্যাপই যথেষ্ট।
ফালাকাটার তরুণ-তরুণীর করা ‘ভোটের বাজার’ শীর্ষক র্যাপ এর মধ্যেই ভাইরাল হয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পরা এই র্যাপ এখন রীতিমতো সকলের গলায়। ইউটিউবে (YouTube) দু’হাজার ৪০০ ভিউ রয়েছে এই র্যাপে।
আসলে ওঁরা কেউ ব্যবসায়ী তো কেউ শিক্ষক। আবার কেউ গৃহবধূ তো কেউ গ্যারাজ মেকানিক। ফালাকাটার এমনই বিভিন্ন পেশার তরুণ-তরুণীরা সাংস্কৃতিক কর্মী। তাই তাঁরা একসঙ্গে কখনও গান বাঁধেন, কখনও আবার অভিনয় করেন। শুধু তাই নয়। সিনেম্যাটোগ্রাফি, এডিটিং সহ নানান দিকে পারদর্শী তাঁরা।
তাঁরা জানিয়েছেন, ভোটের সময় নেতারা কেউ টাকা বিলোয় তো কেউ ঢালাও খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধেই এমন অভিযোগ ওঠে। বাংলা গান, সিনেমা হলেও র্যাপ কিন্তু এবার প্রথম। পয়লা বৈশাখের দিন ‘ভোটের বাজার’ শীর্ষক র্যাপটি নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল ‘রাবাণা’তে রিলিজ হয়েছে। রিলিজের পরেই অবশ্য আলিপুরদুয়ার (Alipurduar), কোচবিহার (Cooch Behar) সহ উত্তরবঙ্গে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভিডিওটি।
র্যাপের লেখক গিরিধারী সূত্রধরই সুর দিয়েছেন। মিউজিক দিয়েছেন দেবজিৎ দাস। ফালাকাটার রেকর্ডিং স্টুডিও গিয়ার-৬’এ করা হয়েছে রেকর্ডিং। মোট ৩ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের র্যাপটির মূল বিষয়বস্তুই ‘ভোট।’ অভিনয়ে করেছেন গিরিধারী সূত্রধর, সৌগত ঘোষ, সমীর সরকার, নীলাদ্রিশেখর রায়, নৈরিতা ভদ্র, সুপর্ণা গুহ নিয়োগী, পল্লবী আচার্য, কৌশিক দাস, শুভ আচার্য সহ আরও বেশ কয়েকজন। র্যাপের শুটিং হয়েছে ফালাকাটার বিভিন্ন হাটবাজারে। ভোটের আগে নেতাদের প্রতিশ্রুতি, টাকা বিলানো, ভোটারদের খাওয়াদাওয়া, বুথ জ্যাম করে গুন্ডা দিয়ে ভোট করার দৃশ্যও ফুটে উঠেছে।
গিরিধারী বলেন, ‘আমাদের তৈরি ছ্যাকা নামে একটি মিউজিক ভিডিও বাংলাদেশের ঈগল মিউজিক রিলিজ করেছিল। বেশ কয়েকদিনের মধ্যেই জনপ্রিয়তা পেয়েছিলাম। তারপরেই ভোটের বাজার নিয়ে কাজ শুরু। এটা আসলে ভোট নিয়ে আমাদের রাজ্যের বাস্তব ছবি র্যাপের মাধ্যমে প্রকাশ করেছি। ভোটারদের সচেতন করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।’
দেবজিৎ দাস বলেন, ‘ভোটের বাজার র্যাপের ভাষাটিতে একটু বাংলাদেশের ছোঁয়া আছে। এই ভাষার চল রয়েছে আবার উত্তরবঙ্গেও। পুরো ভিডিওটি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা।’
‘ভোটের বাজার’ র্যাপ রিলিজের পর থেকেই রোজ ভিউয়ার বাড়ছে। এমনকি র্যাপারদের থেকে অনেক রাজনৈতিক নেতারা দেখার জন্য লিংকও চেয়ে নিচ্ছেন। বিশেষ করে নতুন ভোটারদের কাছে র্যাপটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বলেই মত তরুণদের। শুধু ফালাকাটা নয়, আশপাশের এলাকায় এখন মোবাইলে মোবাইলে ঘুরছে এই র্যাপ।