জ্যোতি সরকার, জলপাইগুড়ি: অবশেষে রাজনীতি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ (TMC MP) তথা টলিউডের অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী (Mimi Chakraborty)। বৃহস্পতিবারই এই সিদ্ধান্তের কথা জানান মিমি। খবরটি শুনে স্বাভাবিকভাবেই বিষণ্ণ তাঁর পৈতৃক ভিটে জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) পান্ডাপাড়ার মানুষ। যদিও মিমির আত্মীয়পরিজনদের মধ্যে এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া মিলেছে।
মিমির পাড়া ছেয়ে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির পতাকায়। অভিনেত্রীর বাড়ির গেটে তৃণমূলের পতাকা লাগানো হয়েছে। এরই মধ্যে মিমির রাজনীতি ছাড়ার সিদ্ধান্ত যেন পরিবেশ খানিকটা ম্লান করেছে। পান্ডাপাড়া কালীবাড়ির বিপরীতেই ভিতর পান্ডাপাড়া। সেখানে যেতেই দেখা মিলল অবসরপ্রাপ্ত তিস্তা সেচ প্রকল্পের কর্মী কমল পাসোয়ান এবং ফ্ল্যাটের প্রহরী জীবেশ রজকের সঙ্গে। জানালেন, মিমির রাজনীতি ছাড়ার সিদ্ধান্তের বিষয়টি শুনে যথেষ্টই হতাশ তাঁরা। কমলবাবুর কথায়, ‘পাড়ার সকলের স্নেহের মেয়ে মিমি। ২০১৯ সালে মহানগরীর যাদবপুর (Jadavpur MP) থেকে মিমি সাংসদ হয়েছিল। সেজন্য আমরা গর্বিত। পাড়ার মেয়ের নাম রাজ্য থেকে দেশে ছড়িয়েছে। মিমি রাজনীতির বৃত্ত থেকে সরে আসায় জাতীয় স্তরে প্রচার তেমন মিলবে না বলে আমাদের ধারণা। তাই মন খারাপ।’
কাছেই ৭০ ছুঁইছুঁই মিমির মামা শ্যাম চক্রবর্তীর বাড়ি। শ্যামবাবুর কথায়, ‘মিমিকে অভিনয়ের প্রয়োজনে বিভিন্ন সময়ে দেশের নানা প্রান্ত এমনকি বিদেশেও যেতে হয়। এর পরেও সাংসদ হিসাবে ও যথাযথ দায়িত্ব পালন করেছে। অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতির কাজে সামঞ্জস্য রক্ষা করে চলতে ওর অসুবিধা হচ্ছিল। ইতিপূর্বে অনেকবারই ভাগ্নি আমাকে একথা জানিয়েছে। রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছে পেশাগত দিকের কথা চিন্তা করেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি মিমির যথেষ্ট শ্রদ্ধা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীও মিমিকে স্নেহ করেন।’
মামাবাড়ি পেরিয়েই মিমিদের বাড়ি। দোতলা বাড়ি। ৭০ ছুঁইছুঁই কেয়ারটেকার বঙ্গ রায়। বঙ্গ জানালেন, তিনি খুব ছোটবেলা থেকেই মিমিদের বাড়িতে রয়েছেন। মিমিকে খুব ছোট থেকেই দেখেছেন। তাঁকে সাংসদ হিসাবে দেখতে পেয়ে খুব ভালো লেগেছিল বঙ্গবাবুর। মিমির রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা তাঁকে পীড়া দিচ্ছে বলে জানালেন। মিমি বাস্তব দিক বিশ্লেষণ করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে তাঁর অভিমত।
মিমির মামি কান্তা চক্রবর্তী কংগ্রেসি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনি বলেন, ‘মিমি ভোটে দাঁড়ানোর সময় আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করেনি। রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার সময়ও কোনও আলোচনা করেনি। বিষয়টি সম্পূর্ণ ওর ব্যক্তিগত। মামি হিসাবে আমি এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করব না।’