বালুরঘাট: বৃষ্টির অভাবে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকরা। প্রয়োজনের তুলনায় বৃষ্টি কম হওয়ার জেরে আমন ধানের চারা রোপণের কাজ পিছিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, পাট পচানোর কাজেও জলের অভাব দেখা দিয়েছে। বালুরঘাট তথা জেলায় এখনও ৪০ থেকে ৪১ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। চাষবাসের পরিস্থিতি বেগতিক হলেও এখনও শুরু হয়নি ফসল বীমা। যার জেরে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কৃষকদের কপালে। তবে শীঘ্রই বীমার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে আশ্বাস কৃষি দপ্তরের।
দক্ষিণ দিনাজপুর মূলত কৃষি প্রধান জেলা। আষাঢ় মাস শেষ হয়ে শ্রাবণ মাস শুরু হলেও বৃষ্টির দেখা নেই বালুরঘাট তথা দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। তীব্র গরম আর বৃষ্টির অভাবে কৃষি জমি কার্যত শুকিয়ে কাঠ। ধান লাগাতে ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন কৃষকরা। জেলায় প্রধান অর্থকরী ফসল ধান ও পাট। জেলার প্রায় আটটি ব্লকেই বিপুল পরিমাণ জমিতে ধান চাষ হয়। মূলত এই সময় আমন ধানের চাষ শুরু হয়। কিন্তু কৃষকরা জমিতে পর্যাপ্ত জল দিতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে পাম্প সেট, শ্যালো মেশিন সহ বিভিন্ন উপায়ে জলসেচ করতে হচ্ছে তাদের। যার ফলে কৃষিকাজের খরচ বাড়ছে। পাশাপাশি, পাট পচানো ও ধোয়ার ক্ষেত্রেও তীব্র সমস্যায় পড়ছেন তারা। বৃষ্টির ঘাটতির জেরে কার্যত মাথায় হাত কৃষকদের। এদিকে জেলা কৃষি ও আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ধান লাগাতে এই সময় যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত প্রয়োজন। তার প্রায় ৪০ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। এদিকে ওই সমস্ত প্রক্রিয়ায় চাষ করতে জ্বালানি তেল বা বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে। যার ফলে এবার চাষের খরচ অনেকটাই বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বালুরঘাটের ভূষিলা এলাকার এক কৃষক নিশীথ মুর্মু বলেন, ‘দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ার জেরে কৃষি জমি শুকিয়ে গিয়েছে। বৃষ্টি না হলে এবছর চাষের প্রচুর ক্ষতি হয়ে যাবে। বহু বছর পর এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কৃষিকাজের উপরে আমরা নির্ভর করে থাকি। বৃষ্টির অভাবে মহাবিপদে পড়েছি। দ্রুত ফসল বীমার প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত।’
বালুরঘাট ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা তনয় সাহা বলেন, ‘এই মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের তুলনায় অনেক কম বৃষ্টি হয়েছে। ফলে ধান রোপন ও পাট পচানোর কাজে কৃষকের সমস্যা হচ্ছে ঠিকই। এই পরিস্থিতি আগামী ১০-১৫ দিন যদি থাকে, তাহলে ভাবনা চিন্তা করা হবে। এখন যারা জলসেচের আওতাভুক্ত, তারা শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে কাজ করছেন। শীঘ্রই ফসল বীমার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।’