লাটাগুড়ি: গরুমারা থেকে হারিয়ে যাওয়া ‘পিগমি হগ’-কে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে বন দপ্তর। কয়েক দশক আগে গরুমারাতে এই প্রাণীটির দেখা মিললেও বর্তমানে এই জঙ্গলে আর অস্তিত্ব নেই এই প্রাণীটির। গরুমারা থেকে হারিয়ে যাওয়া এই প্রাণীটিকে ফের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে বন দপ্তর সূত্রে খবর।
সাধারণত ৫৫ থেকে ৭১ সেন্টিমিটার লম্বা এই প্রাণীটির ওজন হয় ৬ থেকে ১১ কেজির মধ্যে। শেষবার আটের দশকে গরুমারায় এই স্তন্যপায়ী প্রাণীটির দেখা মিলেছিল। কোনও এক সময় নেপাল এবং উত্তরবঙ্গ হয়ে উত্তরপ্রদেশ থেকে অসম পর্যন্ত বিভিন্ন বনাঞ্চলে দেখা মিলত এই পিগমি হগের। মূলত ছোট ঘাসবনে মাটিতে গর্ত করে এরা বসবাস করে। বিভিন্ন উপজাতি মানুষের শিকার ও জনবসতি বেড়ে যাওয়ায় ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হতে থাকে এই প্রাণীটি। বর্তমানে অসমের মানস জাতীয় উদ্যানে এই পিগমি হগের অস্তিত্ব রয়েছে। সেখান থেকেই পুনরায় গরুমারায় এই প্রাণীটিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলে বন দপ্তর সূত্রে খবর।
গরুমারায় বর্তমানে এর বাসস্থানের জন্য কী ধরনের পরিকাঠামো প্রয়োজন তার প্রাথমিক মূল্যায়ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণী বিভাগের বনপাল ভাস্কর জেভি। বন দপ্তর সূত্রে খবর, প্রাথমিকভাবে গরুমারা জঙ্গলের বিভিন্ন এলাকায় সমীক্ষা করে জানা গিয়েছে, গরুমারা জঙ্গলের ভেতরে থাকা গরাতি বিটের বিস্তীর্ণ এলাকা ‘পিগমি হগের’ বসবাসের একেবারে উপযুক্ত। তারা যে ধরনের ঘাস ও খাবার খায় সেগুলো এই এলাকায় যথেষ্ট রয়েছে। সমীক্ষায় উঠে আসা সেই সমস্ত বিষয় রিপোর্ট আকারে রাজ্য বন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে ইতিমধ্যেই। বন দপ্তর জানিয়েছে, রাজ্য বন দপ্তরের তরফ থেকে অসম বন দপ্তরের সঙ্গেও ইতিমধ্যে যোগাযোগ করা হয়েছে। ভাস্কর জেভি বলেন, ‘যেহেতু গোটা বিষয়টি একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে এবং সব দিক খতিয়ে দেখেই উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ বন দপ্তরের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পরিবেশপ্রেমীরা। ময়নাগুড়ি রোড পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের সম্পাদক নন্দু রায় বলেন, ‘বন দপ্তরের এই উদ্যোগ সত্যি প্রশংসনীয়। এতে গরুমারার জীববৈচিত্র্য আরও সুদৃঢ় হবে।’