আলিপুরদুয়ার: তিনি সর্বহারা দলের নেত্রী মিলি ওরাওঁ। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তিনি আলিপুরদুয়ার আসনে আরএসপির প্রার্থী। আগামী ১৯ এপ্রিল ইভিএমে মিলি তাঁর মূল দুই প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের প্রকাশ চিকবড়াইক বা বিজেপির মনোজ টিগ্গাকে পিছনে ফেলতে পারবেন কি না তার উত্তর মিলবে ৪ জুন ভোটের ফলে। কিন্তু সম্পত্তির হিসাবে ইতিমধ্যেই দুই প্রতিদ্বন্দ্বীকে বেশ কয়েক ফার্লং পিছনে ফেলে দিয়েছেন মিলি।
মনোনয়নপত্রের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া সম্পত্তির হলফনামা থেকে এমন তথ্য পাওয়া গিয়েছে। হলফনামায় নিজের সম্পত্তির কথা খোলাখুলি জানিয়েছেন বলেই মিলির দাবি। তাঁর কথায়, ‘আমার যে সম্পত্তি আছে সেটাই দিয়েছি। কেউ যদি সম্পত্তি লুকিয়ে রাখেন তাহলে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু আমার কিছু লুকোনোর নেই। আমার সোনার গয়না ছিল। ওগুলির দর এখন অনেকটাই বেড়েছে।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই মনোনয়নপত্র জমা দেন মিলি। হলফনামা অনুযায়ী তাঁর অস্থাবর সম্পত্তির আর্থিক মূল্য ৩৩ লক্ষ ৪৬ হাজার ৮৪৫ টাকা। হাতে রয়েছে মাত্র ১০ হাজার টাকা। প্রকাশ চিকবড়াইকের হাতে রয়েছে ৬৫ হাজার টাকা। তাঁর অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য ১২ লক্ষ ৮৮ হাজার তিন টাকা। আর মনোজ টিগ্গার হাতে রয়েছে ৭৫ হাজার টাকা। তাঁর অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য ২৭ লক্ষ ৬২ হাজার ৪১২ টাকা। তৃণমূল ও বিজেপি প্রার্থীর চেয়ে মিলির সম্পত্তির পরিমাণ যে বেশি সেটা নির্দ্বিধায় বলা যায়। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বামফ্রন্টের বড় শরিক সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য শতরূপ ঘোষের বিরুদ্ধে ‘২২ লাখি গাড়ি খরিদের’ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। বামফ্রন্টের নেতারা নিজেদের ‘গরিব পার্টি’র সদস্য বলে দাবি করলেও তাঁদের অনেকেরই সম্পত্তির খতিয়ান সে দাবি উড়িয়ে দেয়। আলিপুরদুয়ারের আরএসপি প্রার্থীর ক্ষেত্রেও একই ছবির দেখা মিলল।
যদিও বাম নেতাদের দাবি, মিলির বাবা মনোহর তিরকি রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী, বিধায়ক ও সাংসদ ছিলেন। তাঁর স্বামীও চাকরিজীবী। সেক্ষেত্রে এই পরিমাণ সম্পত্তি থাকা খুব একটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। হলফনামায় মিলি জানিয়েছেন, তিনি দক্ষিণ কলকাতার রাসবিহারী বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটার। পেশা হিসাবে গৃহকর্মের কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁর সম্পত্তির বড় অংশ হিসাবে রয়েছে প্রায় ২০০ গ্রাম সোনা। যার বর্তমান বাজার মূল্য ১২ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা। এছাড়া, কলকাতার কয়েকটি ব্যাংকে তাঁর বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। রয়েছে বেশ কিছু ফিক্সড ডিপোজিটও। ডাকঘরেও রয়েছে অনেকগুলি কিষান বিকাশ পত্রও। বিনিয়োগ করা আছে মিউচুয়াল ফান্ডেও। স্বামীর সম্পত্তির হিসেব ধরলে পরিমাণটা বাড়বে বই কমবে না। এখন দেখার সম্পত্তিতে এগিয়ে থাকা মিলি ৪ জুনের ভোটের ফলে প্রতিদ্বন্দ্বীদেরও এভাবেই পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে পারেন কি না।