গাজোল: ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে আবারও মৃত্যু ঘটল এক পরিযায়ী শ্রমিকের (Migrant Workers)। নির্মাণকার্য চলাকালীন ছয় তলার উপর থেকে পড়ে মৃত্যু (Death) হয় তাঁর। ঘটনার জেরে কয়েকদিন ধরেই শোকের আবহ গাজোলের হবিনগর গ্রামে। শুক্রবার তাঁর দেহ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স (Ambulance) ঢুকতেই ছুটে আসেন গ্রামবাসীরা। সহায় সম্বলহীন ওই পরিবারের জন্য সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছেন সকলেই।
কর্ণাটকের (Karnataka) বেলগামে একটি আবাসনের নির্মাণকার্যের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন গাজোলের চাকনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের হবিনগর গ্রামের বাসিন্দা পরিতোষ মণ্ডল (৩৫)। গত মঙ্গলবার বিকেলে সাটারিংয়ের কাজ করার সময় ছয় তলার উপর থেকে নীচে পড়ে যান। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
স্থানীয় বাসিন্দা গুরুদাস মণ্ডল বলেন, “গ্রামে মানুষদের কাজ নেই। এমনকি অনেকেরই তেমন কোনও জমি জায়গা নেই যে চাষবাস করে জীবিকা নির্বাহ করবে। তাই এই এলাকার বেশিরভাগ মানুষেরই জীবিকা নির্বাহের একমাত্র উপায় ভিনরাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক। সংসার চালানোর জন্য অন্যান্যদের সঙ্গে পরিতোষও ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করত ১০-১২ বছর ধরে। বছরখানেক ধরে কর্ণাটকের বেলগামে একটি আবাসন তৈরির কাজে যুক্ত ছিল। গাজোলের একটি ঠিকাদারের মাধ্যমে ওই কাজে যোগ দিয়েছিল। কাজ করে যেটুকু আয় করতেন তাই দিয়েই কোনও রকমে চলতো সংসার। সরকারের কাছে আমরা আবেদন জানাচ্ছি এই পরিবারটিকে আর্থিক সাহায্য করা হোক।” এদিকে স্বামীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই কেঁদেই চলেছেন স্ত্রী পূর্ণিমা মণ্ডল । তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন গ্রামের মহিলারা। একমাত্র ছেলে পীযূষ তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। এখনও সে ঠিকভাবে বুঝেই উঠতে পারেনি যে কত বড় ক্ষতি হয়ে গেল তাঁর।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, “একরাশ আতঙ্ক বুকে নিয়ে বাড়ির মানুষেরা কাজ করতে যান ভিনরাজ্যে। যাওয়ার ইচ্ছে না থাকলেও বাধ্য হয়ে যেতে হয় তাঁদের। অনেকেই কাজ সেরে বেশ কিছু টাকা-পয়সা নিয়ে ফিরে আসে বাড়িতে। আবার অনেকেরই মৃতদেহ ফিরে আসে। সংবাদ মাধ্যমে প্রায় প্রতিদিনই উঠে আসে পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর খবর। এই মৃত্যুমিছিল যে কতদিন চলবে কে জানে!”