শামুকতলা: প্রথমে প্রেম, তারপর পাচার। সম্পর্কের ফাঁদে জড়িয়ে আলিপুরদুয়ার জেলার শামুকতলা থানার অন্তর্গত এলাকার বছর তেরোর এক কিশোরীকে গুজরাটের পাচারের ছক কষা হয়েছিল। গত ২০ এপ্রিলের ঘটনা।শেষমেশ শামুকতলা থানার পুলিশের তৎপরতায় সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ওই কিশোরীকে উদ্ধার করার পাশাপাশি পাচারকারী তরুণকে গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পাঁচদিন ধরে শামুকতলা থানার পুলিশের একটি বিশেষ দল তদন্ত চালিয়ে এই সাফল্য পেয়েছে।
গত ২০ এপ্রিল অসম সীমানার বক্সিরহাট এলাকার বাসিন্দা অজয় বারিয়া নামে এক তরুণের সঙ্গে পালিয়ে যায় ১৩ বছরের ওই কিশোরী। পুলিশের হাতে কিশোরী নিখোঁজের তথ্য আসার পর তাকে উদ্ধারের তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়।
পুলিশ জানতে পারে, ওই মেয়েটির সঙ্গে প্রায় দুই মাস ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওই তরুণ। বিয়ে করে সংসার পাতার স্বপ্ন দেখায় তাকে। শামুকতলা থানার ওসি জগদীশ রায় বলেন, ‘শামুকতলার ওই কিশোরী পাচার হওয়ার পর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়। তদন্তে নেমে আমরা জানতে পারি, কোচবিহার-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া একটি গ্রামে রয়েছে মেয়েটি।’ খুব দ্রুত তাকে গুজরাট পাচার করে দেওয়া হবে বলে পুলিশের কাছে খবর আসে। এরপরই বিশেষ দল তৈরি করে নজরদারি শুরু হয়।
গুজরাট যাওয়ার আগে ওই কিশোরীকে নিয়ে বুধবার রাতে বক্সিরহাট এলাকায় আসে ওই তরুণ। তখনই তাকে সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিশোরীকে উদ্ধার করে শামুকতলা থানায় নিয়ে আসা হয়। নির্দিষ্ট ধারায় ধৃত তরুণের বিরুদ্ধে মামলা শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।
ডুয়ার্সের চা বাগান এবং প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকার সহজসরল তরুণীদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ভিনরাজ্যে পাচার করে দেওয়ার ঘটনা এর আগেও অনেক ঘটেছে। সিনি নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কোঅর্ডিনেটর অসিত শিকদার বলেন, ‘প্রেমের ফাঁদে ফেলে কিশোরী পাচারের ঘটনায় আমরা রীতিমতো উদ্বিগ্ন। এই ধরনের ঘটনা এড়াতে আমরা স্কুল- কলেজ সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রচার অভিযান চালাচ্ছি।’