মেখলিগঞ্জ: কালীপুজোয় গছা দেওয়া উৎসব আজ অনেকটাই ম্লান। কমেছে শীদল, ছ্যাকা খাওয়ার রীতিও। যা নিয়ে হতাশার কথা বলেছেন কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ ব্লকের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার বিভিন্ন প্রবীণ নাগরিকরা। এরই মধ্যে আধুনিকতার ধাক্কা সামলে কালীপুজোর রাতে অন্ধকার ঘোচাতে সামান্য কিছু মানুষ পুরোনো এই রীতিকে ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। তাঁদের মত, কয়েকজনের দৌলতেই আজও অবশ্য নিজেদের হাতে তৈরি পাট কাঠির ঠগার উপর প্রদীপ জ্বলে সীমান্তের গ্রামে। জানা গিয়েছে, পূর্ব পুরুষদের স্মরণ করতেই এই ঠগার উপর প্রদীপ জ্বালিয়ে আসছেন তাঁরা।
এখনও সেইসব মানুষের জন্যই কালীপুজোর পরদিন শুটকি মাছ পুড়িয়ে খাওয়া হয় কিংবা শুকনো মাছ পুড়িয়ে সেই গন্ধ বাড়ির চারপাশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। তবে সেটাও হাতেগোনা কিছু বাড়িতে। জানা গিয়েছে, কালীপুজোর পরের দিন বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সমাজের বিভিন্ন মানুষের মধ্যে এই শীদল, শুটকি মাছ পোড়া দেওয়ার নিয়ম চালু ছিল। এখন এই রীতি মেনে চলার মানুষের সংখ্যা কমে গিয়েছে।
যেহেতু পূজার্চনা দিয়ে চোর ডাকাতের দল তাদের অপকর্ম শুরু করে থাকে তাই মাছের গন্ধ পেলে সেইসব গৃহস্থের বাড়িতে চোর ডাকাতেরা নাকি প্রবেশ করে না। কোথাও কোথাও আবার চোর ডাকাত ঠেকাতে কালীপুজোর পরদিন শুটকি মাছ পুড়িয়ে সেই গন্ধ বাড়ির চারপাশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়ে থাকে। বিশিষ্ট লোকসংস্কৃতি গবেষক শচীমোহন বর্মন জানিয়েছেন, একটা সময় কালীপুজোর দিনে রাজবংশী সমাজের মধ্যে ব্যাপক হারে শীদল, ছ্যাকা খাওয়ার রীতি চালু ছিল।এখন সেটা কমেছে। এর পেছনে অবশ্য একাধিক কারণ রয়েছে।