শিলিগুড়ি ও বেলাকোবা: সিকিমে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে তিস্তায় জল বেড়েছে। তিস্তার জল ঢুকে উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ির একাধিক গ্রাম জলমগ্ন। বৃহস্পতিবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে করেছেন রাজ্যপাল, সেচমন্ত্রী। দুজনেই দিয়েছেন সাহায্যের আশ্বাস।
বৃহস্পতিবার সকাল নটা নাগাদ জলপাইগুড়ির গজলডোবায় একটি সরকারি আবাসনে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। সেই বৈঠকে রাজ্যের চার মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, সেচ দপ্তরের আধিকারিক, জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার উপস্থিত ছিলেন। প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠকের পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান সেচমন্ত্রী। তার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো তিনি এসেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন করবেন। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন করার পরই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বোঝা যাবে।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও উত্তরবঙ্গে আসছেন, এদিন বাগডোগরা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের থেকে একথা শুনে সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভয়ে রাজ্যপাল উত্তরবঙ্গে আসছেন। রাজ্যপাল তাঁকে দেখে পালাচ্ছেন। অভিষেককে দেখে গিরিরাজ সিং পালাচ্ছেন, প্রতিমন্ত্রী পালাচ্ছেন, এখন রাজ্যপালও পালাচ্ছেন। গরিব মানুষের হকের টাকা চাইতে যাচ্ছেন অভিষেক। তাঁকে হেনস্তা করা হচ্ছে। কারও কাছে এর জবাব নেই বলে এখন তাঁকে দেখে পালাচ্ছেন সকলে।’
অন্যদিকে, গজলডোবায় সেচমন্ত্রী আসার কিছুক্ষণ পরই জলপাইগুড়ির সদর ব্লকের পাটকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের রংধামালিতে আসেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেখানে মৌয়াবাড়ির চরবাউলি বাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। রংধামালি বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন ও তাঁদের অভিযোগ শোনেন। এরপর যান রংধামালি প্রাইমারি স্কুলের ত্রাণ শিবিরে। সেখানে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মিন্টু দাস, সঞ্জীব সরকারদের অভিযোগ, প্রতি বছর নদীর জল ঢুকে তাঁদের বিঘার পর বিঘা জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। তাঁরা এই সমস্যা সমাধানে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ দাবি করেন। রাজ্যপাল এবিষয়ে তাঁদের আশ্বস্ত করে জানান, এই বিষয়ে রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার পিছু এদিন ১০০০ টাকা করে আর্থিক সাহায্য তাঁর তহবিল থেকে দেওয়ার আশ্বাস দেন রাজ্যপাল।
পাটকাটার প্রধান দীননাথ রায় বলেন, ‘রাজ্যপাল তাঁর তহবিল থেকে পরিবার পিছু ১০০০ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। রাজ্যপালের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তরা উপকৃত হবেন বলে আশা।’ প্রধান আরও জানান, এলাকার চার হাজার ছয়শো হেক্টর চাষের জমি বর্তমানে জলের তলায়। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে যতটা সম্ভব সহযোগিতা করা হচ্ছে।