হরিশ্চন্দ্রপুর: পঞ্চায়েত ভোটে স্ত্রীর হয়ে প্রচারের অভিযোগ উঠল রাজ্য পুলিশের এক কর্মীর বিরুদ্ধে। পাশাপাশি, এলাকার আরেক শাসকদলের প্রার্থীর হয়েও তাঁকে প্রচার করতে দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে বেশ কয়েকটি ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ওই পুলিশকর্মী পার ভালুকা বুথের তৃণমূলের প্রার্থী সুচিত্রা মণ্ডলের হয়েও এলাকায় ঘুরছেন এবং ভোটারদের সঙ্গে কথা বলছেন। উল্লেখ্য, হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক এলাকার ভালুকা গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৩০ নম্বর বুথে শাসকদলের প্রার্থী হয়েছেন সুতপা সাহা। তাঁর স্বামী মধুসূদন সাহা রাজ্য পুলিশের কর্মী।
গত ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মধুসূদন সাহার স্ত্রী ভালুকা অঞ্চল থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতের পার ভালুকা থেকে শাসকদলের প্রার্থী হয়েছিলেন। সে বছর তিনি হেরে যান। এই বছরও তিনি ওই অঞ্চল থেকে আলাদা একটি আসন ভালুকা বাজার থেকে আবার শাসকদলের প্রার্থী হয়েছেন। এলাকার বিরোধী দল এবং বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ, গত পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই তিনি স্ত্রীর হয়ে এলাকায় শাসকদলের প্রচার করছেন। রাজ্য পুলিশের কর্মী হয়ে কীভাবে ভোটের প্রচারে অংশগ্রহণ করছেন, এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বিরোধী এবং বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীরা। এই নিয়ে বিরোধীরা নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন।
যদিও সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন পুলিশকর্মী মধুসূদন সাহা। তিনি জানিয়েছেন, প্রচার করতে নয়, স্ত্রীর সঙ্গে মন্দিরে প্রণাম করতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই কেউ ছবি তুলে ভাইরাল করেছে। যদিও ভালুকা অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি ধীরেন্দ্রনাথ সাহা এই অভিযোগ নিয়ে বলেছেন, ‘ওই পুলিশকর্মী ছুটিতে এসে আমাদের সঙ্গে থাকলেও অন ডিউটিতে তিনি প্রচার করেন না।’
জেলা পুলিশের এক অধিকর্তা এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, শুধু পুলিশ নয়, কোনও সরকারি কর্মীই প্রত্যক্ষভাবে নির্বাচনে কোনও রাজনৈতিক দলের হয়ে প্রচার চালাতে পারেন না। সেটা আইন বিরুদ্ধ।
এদিকে, এই ঘটনা সামনে আসতে এলাকার বিরোধীরা সরব হয়েছেন এবং ওই প্রার্থীর প্রার্থীপদ বাতিলের দাবিও তুলেছেন। পাশাপাশি, এই অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের কাছে জানানো হবে বলেও তাঁরা জানিয়েছেন। যদিও ওই বুথের কংগ্রেস নেতা রাজেশ চৌধুরীর বক্তব্য, ‘শাসনকালের প্রার্থীর স্বামী পুলিশকর্মী এলাকায় প্রচার করছেন আমরাও জানতে পেরেছি। এটা আইনবিরুদ্ধ। অবিলম্বে আমাদের দলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো।’
ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক শ্রীমন্ত মিত্র বলেন, ‘এই অভিযোগ আমার কাছেও এসেছে। আমরা সমস্ত প্রমাণ নিয়ে অবিলম্বে এই অভিযোগ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জানাব। এইভাবে একজন পুলিশকর্মী তাঁর প্রভাব বিস্তার করে ভোট করাবে। এটা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক কিষান কেডিয়া বলেন, ‘খুব গুরুতর অভিযোগ উঠেছে সেটা আমাদের স্থানীয় দলীয় কর্মীরা জানিয়েছেন। আমরা জানতে পেরেছি, ওই প্রার্থীর স্বামী এলাকায় নিজের প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছেন। আমরা অবিলম্বে এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করব।’