হরিশ্চন্দ্রপুর: হরিশ্চন্দ্রপুরের বাংলা-বিহার সীমানার কুশিদা অঞ্চলের নসরপুরে অ্যাসিড দগ্ধ মহিলার দেহ উদ্ধারের ঘটনার পর কেটে গিয়েছে প্রায় এক পক্ষকাল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অধরা অপরাধী। এমনকি, এখনও ওই মহিলার পরিচয় মেলেনি। ওই মহিলার পরিচয় জানতে পুলিশ ইতিমধ্যেই ডিএনএ পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছে। এদিকে, দ্রুত অপরাধী গ্রেপ্তার এবং ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ করার জন্য সরব হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
নিখোঁজ এক গৃহবধূর বাপের বাড়ি এবং শ্বশুরবাড়ির পরিবারের মধ্যে এই দেহ নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়। তবে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেহ এখনও ডিএনএ টেস্টের জন্যও পাঠানো হয়নি। পুলিশ জানাচ্ছে, ডিএনএ টেস্ট হওয়ার পর রিপোর্ট এলেই সবটা বলা যাবে। কিন্তু বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছে, তবে পুলিশের কী ভূমিকা? পুলিশ কেন এখনও দোষীদের চিহ্নিত বা গ্রেপ্তার করতে পারছে না? ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়েও কেন খোলসা করছে না পুলিশ? তদন্তে গা ঢিলেমির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। সঙ্গে উঠেছে সিবিআই তদন্তের দাবিও।
চলতি মাসের ১৪ তারিখ সকালে অ্যাসিড দগ্ধ এক মহিলার দেহ উদ্ধার হয়। শরীরে ছিল ছুরির কোপ। দেহের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল মদের বোতল এবং গর্ভনিরোধকের প্যাকেটও। স্থানীয়রা অনুমান করেছিলেন, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে ওই মহিলাকে। দেহ উদ্ধারের একদিন পর চাঁচল থানা এলাকার খরবার একটি গ্রামের নিখোঁজ এক গৃহবধূর পরিবার দাবি করে, ওই দেহ তাদের। কিন্তু মালদা মেডিকেলে বাবার বাড়ি এবং শ্বশুরবাড়ির পক্ষের দাবি পৃথক হওয়ায় পুলিশ দেহ তুলে দেয়নি। কিন্তু জানা যাচ্ছে, এখনও ডিএনএ টেস্টের জন্য দেহ পাঠায়নি পুলিশ। এদিকে, এত বড় একটি ঘটনা নিয়ে পুলিশ কার্যত চুপ। রহস্যের কোনওরকম কিনারা করতে ব্যর্থ ১৬ দিন পরেও। কীভাবে ঘটল বা কী হয়েছিল? কিছুই এখনও সামনে আসেনি।
বিজেপি র জেলা সাধারণ সম্পাদক কিষান কেডিয়ার অভিযোগ, ‘মনে হচ্ছে পুলিশ এখানে কিছু ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তৃণমূল নেতাদের কিছু হলে তাদের বাড়ির জুতো চুরি হয়ে গেলেও পুলিশ সক্রিয় হয়ে যায়। আর এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও কিনারা করতে পারল না। কোনও দোষীকে গ্রেপ্তার করতে পারল না। আমরা সিবিআই বা সিআইডি তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’
কংগ্রেস নেতা আব্দুস শোভানের বক্তব্য, ‘পুলিশ তো ব্যস্ত তৃণমূলের হয়ে কাজ করতে। কীভাবে, কাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে হবে, কীভাবে গ্রেপ্তার করতে হবে। এরকম একটা বিষয়ে পুলিশ ঠিকভাবে তদন্ত করছে না। আমাদের মনে হচ্ছে তদন্ত ঠিক পথে এগোচ্ছে না।’
হরিশ্চন্দ্রপুর পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। তদন্তে অনেকখানি অগ্রগতি হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষা সহ অন্যান্য সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।