উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: সন্দেশখালির (Sandeshkhali) ঘটনাস্থলে দ্রুত সিসিটিভি (CCTV) বসানোর নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। ঘটনার এক সপ্তাহের বেশি দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও অধরা শাহজাহান। এ নিয়ে মঙ্গলবারও পুলিশের ভূমিকায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। পরবর্তী শুনানিতে ঘটনার দিন দুপুরে দায়ের হওয়া এফআইআরের কপিও আনার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
গতকালের শুনানিতে বিচারপতি ইডির কাছে জানতে চান, তারা আবার ঘটনাস্থলে যেতে চায় কিনা? ইডি উত্তরে জানায়, তথ্যপ্রমাণ সব নষ্ট করা হয়েছে। আর কিছুই বাকি নেই। বিচারপতি রাজ্যের কাছে জানতে চান, ‘ইডি যদি ঘটনাস্থলে আবার যায় বা দরজা ভাঙার চেষ্টা করে তাহলে রাজ্য সাহায্য করবে কি?’ রাজ্য অবশ্য সবরকম সহযোগিতার কথা জানিয়েছে আদালতে।
পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ফের প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘শাহজাহান তাঁর আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন অথচ পুলিশ তাঁর হদিশ পাচ্ছে না। শাহজাহান শেখ কতটা প্রভাবশালী তা ইডি আধিকারিকদের উপর আক্রমণেই স্পষ্ট। অথচ পুলিশ তাঁর নাগাল পাচ্ছে না।’ পাশাপাশি বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এই ঘটনায় ৩০৭ ধারা যুক্ত করা উচিত ছিল। রাজ্য এদিন আদালতে জানায়, ঘটনার দিন ১২.৫৮ মিনিটে পুলিশ শাহজাহানের বাড়িতে গিয়েছিল। বিচারপতি তখন প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা তখন বাড়ি বন্ধ দেখে সিল করেছিলেন? তালা ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন? প্রতিবেশীদের কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন? যদি না করা হয় তাহলে তো পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা।’ ইডি এদিনও সিবিআই বা অন্য কোনও নিরপেক্ষ সংস্থা দ্বারা ঘটনার তদন্তের দাবি করে। তাদের আশঙ্কা, পুলিশ তদন্ত করলে তথ্য ও নথি বিকৃত হতে পারে। যদিও রাজ্যের আইনজীবী ইডির দাবির বিরোধিতা করে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই পুলিশ কাজ করেছে। এরপর রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘অভিযুক্ত দ্রুত গ্রেপ্তার হয়েছে, এটা আদালত দেখতে চায়। পুলিশ যদি তা করতে পারে, তাহলে তদন্তভার তাদের হাতে থাকা নিয়ে আদালত সিদ্ধান্ত নেবে।’ মামলার পরবর্তী শুনানি বুধবার।
আদালতে ইতিমধ্যেই শাহজাহানের আইনজীবী জানিয়ে দেন, তাঁর মক্কেল এই মামলায় এখনই যুক্ত হতে চান না। যদিও সোমবারই আইনজীবী মারফত মামলায় যুক্ত হতে চেয়ে তাঁর বক্তব্য আদালতকে জানানোর আর্জি করেছিলেন শাহজাহান। আদালত মনে করলে শাহজাহান মামলায় যুক্ত হবেন বলে জানান তাঁর আইনজীবী।
সন্দেশখালি কাণ্ডে এদিন আরও ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ফলে এই ঘটনায় ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭। এদিকে, সোমবার ১১৬ জন পুলিশ অফিসারকে বদলি করেছে নবান্ন। তাৎপর্যপূর্ণভাবে বসিরহাটের ডিএসপি সানন্দা গোস্বামী ও বনগাঁ জেলা পুলিশের ডিএসপি দীপেন্দ্র তামাংকে সরানো হয়েছে। সন্দেশখালি কাণ্ডে ও বনগাঁর ঘটনার তদন্তের নেতৃত্বে এই দুই অফিসার ছিলেন। যদিও একে রুটিন বদলি বলেই জানিয়েছে নবান্ন।