বানারহাট ও নাগরাকাটা: রাতভর ভুটান পাহাড় ও ডুয়ার্সজুড়ে ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন বানারহাটের বিস্তীর্ণ এলাকা। জলমগ্ন প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার। ভুটান পাহাড় দিয়ে আসা হাতিনালার জল উপচে বানারহাট সহ বিন্নাগুড়ি এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। জলের স্রোতে বানারহাট স্টেশন এলাকার রেললাইনে ধস নামে। রাত ১২টা থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সোমবার সকালে হয়রানির মুখে পড়তে হয় যাত্রীদের।
বানারহাট হাসপাতাল, বাজার, ক্ষুদিরাম পল্লি, মহাবীর বস্তি, বানারহাট ১ ও ২ কলোনি এলাকা, বিন্নাগুড়ির এস এম কলোনি, নেতাজি পাড়া গতকাল রাত থেকে জলমগ্ন রয়েছে। বানারহাটের ভারত-ভুটান সড়ক, রাজ্য সড়ক, এল আর পি মোড়ের জাতীয় সড়ক রাতে নদীর চেহারা নেয়। বানারহাট ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বানারহাট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুবীর দাস জানান, পুজোর মুখে ব্যবসায়ীদের প্রায় ৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এলাকায় গিয়েছেন জলপাইগুড়ি সাংসদ জয়ন্ত রায়।
এদিকে প্রবল বৃষ্টিতে ভাসল নাগরাকাটার বিস্তীর্ণ এলাকা। ধসে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন লাগোয়া এলাকা। এর জেরে সোমবার সকালে ডুয়ার্স রুটে কিছুক্ষণ ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটে ডায়না রেল সেতু ও রেড ব্যাংক-এর মাঝামাঝিতে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে রেলের তরফে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু হয়। ঘটনাস্থলে আসেন রেল কর্তারা। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার অমরজিৎ গৌতম বলেন, ‘মুষলধারে বৃষ্টির কারণে এই ক্ষতি। কাজ প্রায় শেষের পথে। ডুয়ার্স রুটের ট্রেনগুলিকে ধীর গতিতে চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ এদিকে মুষলধারে বৃষ্টির জেরে নদী, ঝোরার জল উপচে পড়ে। এলাকার মহাদেব মোড়ে এক হাঁটু জল জমে যায়। বেশ কিছু দোকান ও লাগোয়া সুভাষপল্লির কয়েকটি বাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়ার খবরও মিলেছে। এলাকার সার্কাস লাইন, মছুয়াপট্টি এলাকায় বেহাল নিকাশির কারণে জল যন্ত্রণা চরমে ওঠে। বামনডাঙ্গা চা বাগানের মডেল ভিলেজ থেকে কয়েকটি বাড়িতে জল ঢুকেছে। সুখানী বস্তির মনমোহনধূড়া গ্রামে ঢোকার রাস্তায় সুখানী নদীর জল উপচে কিছুক্ষণের জন্য যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। নাগরাকাটার ব্লক প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা আধিকারিক রণিত বিশ্বাস জানান, ক্ষয়ক্ষতি ও জলমগ্নতার বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ খবর নেওয়ার কাজ চলছে।