মানিকচক: (Higher Secondary Exam) টাকা দাও, অ্যাডমিট কার্ড (Admit card) নাও। টাকা না দিলে মিলবে না অ্যাডমিট। এমনই নিদান মানিকচক শিক্ষা নিকেতনের টিআইসির (Manikchak Shiksha Niketan)। টাকা ছাড়া অ্যাডমিট কার্ড নিতে গেলেই মিলছে ধমকানি ও চোখ রাঙানি। এমনই গুরুতর অভিযোগ মানিকচক শিক্ষা নিকেতনের টিআইসি (TIC) সুব্রত প্রামাণিকের বিরুদ্ধে। ‘সেন্টার ফি’র নামে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে টাকা তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ টিআইসির বিরুদ্ধে। ছাত্রদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেওয়ার প্রতিবাদে সুব্রত প্রমাণিকের বিরুদ্ধে স্কুলের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এই স্কুলেরই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। টিআইসির কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরাও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন অভিভাবক বর্তমান টিআইসিকে টাকা তোলার মেশিন বলে অভিহিত করেছেন। সম্পূর্ণ ঘটনায় প্রচন্ড ক্ষুব্ধ মানিকচক শিক্ষা নিকেতনের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক জ্যোতিভূষণ পাঠক। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের থেকে অ্যাডমিট কার্ড দেওয়ার সময় স্কুল কর্তৃপক্ষের টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি সম্পূর্ণ অবৈধ বলে দাবি করেছেন তিনি।
গত শুক্রবার মানিকচক শিক্ষা নিকেতনের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। পূর্ববর্তী নোটিশে উল্লেখ না থাকলেও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা অ্যাডমিট কার্ড নিতে গেলে তাদের কাছ থেকে টিআইসি সুব্রত প্রামাণিক ২২০ টাকা দাবি করে বলে অভিযোগ। কিন্তু এই টাকা দিতে রাজি হয়নি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। আর এতেই প্রচন্ড রেগে যান টিআইসি সুব্রত বাবু। তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন, টাকা নেই তো অ্যাডমিট কার্ড ও নেই। টাকা ছাড়া অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া যাবে না। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সায়ন মণ্ডল, বিকি সাহা, আদিত্য সেন, শিব শঙ্কর মণ্ডলদের বক্তব্য, “দ্বাদশ শ্রেণীতে থাকাকালীন এই নিয়ে আমরা তিনবার স্কুল ফি বাবদ প্রথমে ৩৫০ টাকা, সেশনের মাঝখানে ২৪০ টাকা এবং অ্যাডমিট কার্ড নেওয়ার সময় ২২০ টাকা দিলাম। এত টাকা পশ্চিমবঙ্গের কোনও সরকারি স্কুলে নেওয়া হয় না। অ্যাডমিট কার্ড নেওয়ার সময় প্রধান শিক্ষক আমাদের সেন্টার ফি বাবদ ২২০ টাকা দাবি করেন। কিন্তু আমরা সেই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় আমাদের উচ্চস্বরে ধমক দিয়ে স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেন। পাশপাশি অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হবে না বলে ভয় দেখান। ভয় পেয়ে আমরা ২২০ টাকা দিতে বাধ্য হয়েছি।”
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শিব শংকর মণ্ডল আরও জানান, মাত্র কয়েকদিন আগে আমাদের বন্ধু সায়ন মণ্ডলের বাবা মারা যায়। তার কাছে ২২০ টাকা ছিলনা। তার প্রচন্ড আর্থিক অনটনের কথা জেনেও টাকা ছাড়া তাকেও অ্যাডমিট দেওয়া হয়নি। শেষমেষ আমরা বন্ধুরা চাঁদা তুলে তার টাকা দিয়েছি।
তবে যাকে ঘিরে এত সব অভিযোগ, মানিকচক শিক্ষা নিকেতনের টিআইসি সুব্রত প্রামাণিকের সাফাই, নিয়ম মেনেই টাকা নেওয়া হয়েছে। সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন। ছাত্রদের সঙ্গে বোঝাপড়ায় একটু ভুল হওয়ায় এই বিপত্তি।