মুর্শিদাবাদ: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মুর্শিদাবাদের ছেলে হিমাংশু কর্মকারকে গ্রেপ্তার করেছে যাদবপুর থানার পুলিশ। সামশেরগঞ্জ থানার নিমতিতা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দুর্গাপুর কর্মকার পাড়ার বাসিন্দা হিমাংশু। শুক্রবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারির খবর জানার পর থেকেই তার পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারের লোকেরা এখনও মানতে রাজি নয় হিমাংশু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগিং কাণ্ড বা কোনও ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে।
মুর্শিদাবাদের প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলে হিমাংশু ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী। বহরমপুর শহরে জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর সে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করার জন্য ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু এর কিছুদিনের মধ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অংকে স্নাতক স্তরে পড়াশোনার সুযোগ পেয়ে যাওয়ায় কলকাতায় চলে যায়। স্নাতকোত্তর স্তরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৮০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়ে এবছর জুলাই মাসে পাশ করেছে হিমাংশু। হিমাংশুর কাকা সুকুমার কর্মকার বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই হিমাংশু পড়াশোনার জন্য বাইরে থেকেছে। গ্রামের বাড়িতে সে খুব কমই আসত।’
গ্রামের লোকেদের সঙ্গে কর্মকার পরিবারের খুব একটা মেলামেশা ছিল না। হিমাংশুর বাবা রণজয় কর্মকারের নিমতিতা বাজারে একটি হার্ডওয়ারের দোকান ছিল। বছর আটেক আগে তিনি মারা যান। হিমাংশুর মা মিতালী দাস কর্মকার স্থানীয় শেরপুর শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষিকা। সুকুমারবাবু আরও জানান, হিমাংশুর স্নাতকোত্তর স্তরের পরীক্ষার রেজাল্ট বের হওয়ার পর এমটেক করার সুযোগ পেয়েছিল। এর পাশাপাশি অংক নিয়ে গবেষণারও সুযোগ পায়। কিন্তু এমটেক না পড়ে সে গত ৫ অগাস্ট থেকে সল্টলেকের একটি কেন্দ্র থেকে গবেষণার কাজ শুরু করেছিল। কিন্তু গবেষণা কেন্দ্রে এখনও থাকার ঘর না পাওয়ায় সে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো আবাসিক হস্টেলেই থেকে গিয়েছিল। কিছুদিনের মধ্যে তার হস্টেল ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় হিমাংশু কোনওদিন র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছিল বলে আমাদের জানায়নি। তাছাড়া আমরা বিশ্বাস করি না র্যাগিংয়ের ঘটনার সঙ্গে সে জড়িত। পুলিশ যে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছে, সে কথাও পরিবারের কেউ জানত না। টিভি দেখেই জানতে পারি হিমাংশু গ্রেপ্তার হয়েছে।’