উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: কুস্তি ফেডারেশনের কর্তা ব্রিজভূষণ শরণ সিং-এর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নেমেছেন মহিলা কুস্তিগিররা। কিন্তু দিল্লি পুলিশের বক্তব্য, কুস্তি ফেডারেশনের কর্তার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ নেই। তাই তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। তাই এবার ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে দুটি এফআইআরে মোট ১০টি অভিযোগ দায়ের করেছেন মহিলা কুস্তিগিররা। ওই এফআইআরে কখন, কোথায়, কীভাবে যৌন হেনস্তা করা হয়েছে তা সমস্তটাই উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে এক নাবালিকা কুস্তিগিরের বাবা ও প্রাপ্তবয়স্ক কুস্তিগিররা ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে সমস্ত তথ্য তুলে ধরেছেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, এক কুস্তিগির জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ব্রিজভূষণ তাঁর সঙ্গে রেস্তরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁর বুকে, পেটে হাত দেন। তিন-চারবার এমন করেছেন বলে জানিয়েছেন ওই মহিলা কুস্তিগির। নিজের অফিসে ডেকেও তাঁর অনুমতি ছাড়াই শরীরে হাত দেন বলে অভিযোগ। সামনাসামনি বসে থাকা অবস্থায় কুস্তিগিরের পায়ের উপর পা রাখেন ব্রিজভূষণ। হাঁটুতে হাত দেন তিনি।
দ্বিতীয় অভিযোগ, নিশ্বাস-প্রশ্বাস দেখার নাম করে তাঁর শরীরে হাত দেন ব্রিজভূষণ। অনুশীলন করার সময় কোচের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে তাঁর জামার ভিতর হাত ঢুকিয়ে দেন তিনি। তাঁর ঘরে ডেকে পাঠিয়ে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ।
তৃতীয় অভিযোগ, তাঁর কাছে ফোন ছিল না। পরিবারের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়ার নাম করে কুস্তিগিরকে ঘরে ডাকেন ব্রিজভূষণ। ফোন দেওয়ার নাম করে তাঁকে জড়িয়ে ধরেন অভিযুক্ত কর্তা। প্রয়োজনীয় প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করেন।
চতুর্থ অভিযোগ, নিশ্বাস-প্রশ্বাস দেখার নাম করে এক মহিলা কুস্তিগিরের শরীরেও হাত দেন ব্রিজভূষণ। বুক থেকে পেট পর্যন্ত হাত বোলান তিনি। যেহেতু অভিযোগকারী জানতেন উনি মেয়েদের সঙ্গে অশ্লীল ব্যবহার করেন তাই কখনও তাঁর সঙ্গে আলাদা করে খেতে যেতে চাননি।
পঞ্চম অভিযোগ, ছবি তোলার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন ওই কুস্তিগির। সঙ্গে আরও অনেকে ছিলেন। অভিযোগকারী ছিলেন একেবারে শেষ দিকে। তাঁর পাশে এসে দাঁড়ান ব্রিজভূষণ। অভিযোগকারী বুঝতে পারেন তাঁর পিছনে হাত রেখেছেন অভিযুক্ত। সরে যাওয়ার চেষ্টা করতে গেলে কুস্তিগিরের কাঁধ ধরে আটকে রেখেছিলেন ব্রিজভূষণ।
ষষ্ঠ অভিযোগ, ছবি তোলার নাম করে তাঁকে কাছে টেনে নেন ব্রিজভূষণ। কাঁধ ধরে রেখেছিলেন। নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন ওই কুস্তিগির। ব্রিজভূষণকে ধাক্কা দেওয়ারও চেষ্টা করেন। তখন ব্রিজভূষণ তাঁকে বলেন, ‘বেশি চালাকি করলে আগামী দিনে কোনও প্রতিযোগিতায় নামতে পারবে না।‘
অন্যদিকে, এক নাবালিকাকেও যৌন হেনস্তার শিকার হতে হয়। ছবি তোলার নাম করে তাঁর শরীর ছুঁয়েছেন ব্রিজভূষণ। নিজের শরীরের দিকে জোর করে টেনে নিয়েছেন। তাঁর কাঁধ এবং বুকে ইচ্ছাকৃতভাবে হাত দিয়েছেন। নাবালিকার কোনরকম শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করার ইচ্ছা ছিল না। অভিযোগ, তবুও তাঁকে বারবার উত্ত্যক্ত করেছেন ব্রিজভূষণ।