বালুরঘাট: ‘স্যার, আমার স্ত্রীকে একটু বোঝান প্লিজ, দয়া করে আমাকে বালিশ, চাদর, কম্বল দিতে বলুন।’ শুক্রবার এক ব্যক্তির এই কাতর আর্জি শুনে বালুরঘাট (Balurghat) থানার পুলিশ কার্যত হতবাক। জিজ্ঞাসা করতেই বেরিয়ে এল আসল কারণ। শীতকালে স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক বিবাদে জড়িয়ে প্রবল বিপাকে পড়ে গিয়েছেন ওই ব্যক্তি।
জানা গিয়েছে, একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত ওই অবাঙালি যুবকের প্রায় আট বছর আগে বিয়ে হয় বালুরঘাট শহরের রঘুনাথপুর এলাকার এক যুবতীর সঙ্গে। যেহেতু ওই যুবক ভিনরাজ্য থেকে এই জেলাতে কাজ করতে এসেছিলেন, তাই তিনি বিয়ের আগে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। কিন্তু বিয়ের পর থেকে তিনি শ্বশুরবাড়িতেই ঘরজামাই হয়ে থাকতে শুরু করেন। দিন কয়েক আগে স্ত্রীর (Wife) সঙ্গে তাঁর বিবাদ বাধে। পরিস্থিতি জটিল হলে, ওই যুবককে বাড়ি থেকে বের করে দেয় তার স্ত্রী। ভয়ে কার্যত এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয় ওই যুবককে। ফলে তাড়াহুড়োতে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় পরনের পোশাক ছাড়া কিছুই নিয়ে বেরোতে পারেননি তিনি। এরপর থেকেই পরিস্থিতির চাপে বাধ্য হয়ে অফিসের একটি ঘরে কোনও রকমে রাত গুজরান করতে শুরু করেন।
ইতিমধ্যেই গতকাল বালুরঘাট থানায় ওই যুবকের বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রী বধূ নির্যাতনের মামলা দায়ের করেছেন। সেই সঙ্গে আগামীতে ডিভোর্সের আবেদন করবেন বলে হুমকিও দিয়েছেন। তবে এসবের থেকেও ওই যুবককে বেশি ভাবাচ্ছে হাড় কাঁপানো ঠান্ডা। বালুরঘাটে কয়েক দিন ধরেই চলছে প্রবল শৈত্য প্রবাহ। সূর্যের আলো প্রায় নেই বললেই চলে। এমন ঠান্ডায় লেপ কম্বল ছাড়া অফিস ঘরে থাকছেন তিনি। গত তিন দিন ধরে প্রবল ঠান্ডায় কষ্ট পেয়ে শেষে কোনও উপায় না দেখে এদিন বালুরঘাট থানার দ্বারস্থ হন।
এ বিষয়ে ওই যুবককে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী যে মামলা করে গিয়েছে, তা আমি জানতাম না। আমাকে ওদের বাড়িতে ঢুকতে দেবে না বলে আমি পুলিশের সাহায্য নিতে এসেছিলাম। যাতে করে কম্বল চাদরসহ কিছু সামগ্রী আমি উদ্ধার করে নিয়ে আসতে পারি। এই শীতের রাতে কম্বল চাদর ছাড়া কি কষ্টে যে আমি রাত কাটাচ্ছি, তা আমিই জানি।’ বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছে বালুরঘাট থানার পুলিশ। বধূ নির্যাতনের মামলার তদন্ত করবেন নাকি ওই ব্যক্তির জন্য গরম পোশাকের ব্যবস্থা কোনটা আগে করবেন তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ে গিয়েছে পুলিশ।