আলিপুরদুয়ার: করোনাকালের কথা মনে পড়ে? আর সেই সময় ব্যবহার করা স্যানিটাইজারের কথা? একটা সময় খুব ব্যবহার হলেও আমাদের মধ্যে তার ব্যবহার কিন্তু অনেকটাই কমেছে। তবে যুবসমাজের একটি অংশের মধ্যে নয়। আলিপুরদুয়ার জংশন এলাকায় খালি পড়ে থাকা রেলের আবাসনগুলির একাংশে নিয়মিতভাবে নেশার আসর বসে। আর সেখানে স্যানিটাইজার দিয়ে নেশা করাটা এখন খুব হিট। মেঝেতে স্যানিটাজার ঢেলে তাতে কাগজের টুকরো ফেলে দেওয়া হয়। তারপর তাতে আগুন লাগালে যে ধোঁয়া বের হয় তা শুঁকেই নেশা করা চলে। যারা অ্যাডেসিভের নেশায় আসক্ত তাদের একটি বড় অংশ এভাবে স্যানিটাইজারে আগুন দিয়ে নেশায় মেতেছে।
বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বিপদের আশঙ্কা করছেন। আলিপুরদুয়ার শহরের চিকিৎসক পার্থপ্রতিম দাস বললেন, ‘এভাবে স্যানিটাইজার জ্বালিয়ে নেশা করলে সেই ধোঁয়া ফুসফুসে পৌঁছে কেমিক্যাল নিউমোনিয়া হতে পারে বা মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই নেশায় আসক্ত ব্যক্তি বড়সড়ো শারীরিক সমস্যায় পড়তে পারেন।’ সমস্যা মেটাতে এই নেশায় আসক্তদের নেশামুক্তি কেন্দ্রে পাঠানোর পাশাপাশি মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে বলে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন।
হালে আলিপুরদুয়ার শহরের বিভিন্ন ওষুধের দোকান, মুদিখানায় স্যানিটাইজারের বেশ বিক্রি। নেশার জন্য নির্দিষ্ট অ্যাডেসিভের দাম যেখানে ২৫–২৬ টাকা পড়ে সেখানে ২০ টাকাতেই স্যানিটাইজারের বোতল মিলছে। সহজলভ্য হওয়ায় এই নেশার প্রবণতাও বাড়ছে। এক বাসিন্দা বলেন, ‘সন্ধ্যা নামার পর আলিপুরদুয়ার জংশন এলাকার দক্ষিণ জিতপুর, গোলপার্ক সংলগ্ন এলাকায় খালি পড়ে থাকা রেলের আবাসনগুলিতে বহিরাগত তরুণ–তরুণীদের ভিড় শুরু হয়। তারা নানা ধরনের নেশা করে। অনেকেরই হাতে স্যানিটাইজারের বোতল দেখা যায়।’ বাসিন্দাদের অনেকেই প্রতিবাদ করেছেন। কিন্তু ওই তরুণ–তরুণীদের বাধার মুখে পড়ে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হন। সমস্যা মেটাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জোরালো হয়েছে। শহরে নেশার দাপট রুখতে নিয়মিতভাবে অভিযান চালানো হচ্ছে বলে আলিপুরদুয়ার জংশন ফাঁড়ির ওসি সুব্রত সরকার জানিয়েছেন।