ফাঁসিদেওয়া: চা বাগানে দুর্নীতি প্রসঙ্গে রাম ও বাম উভয়কেই টেনে কটাক্ষ করলেন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস (আইএনটিটিইউসি) এর রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ফাঁসিদেওয়া ব্লকের বিধাননগরে একটি কর্মসূচিতে হাজির হয়ে একথা জানান তিনি। তাঁর কথায়, ২০১৬ সাল থেকে চা বাগান খুলে দেওয়ার কথা বলেছিল বিজেপি। কিন্তু, কেন্দ্রের শাসকদল আজ পর্যন্ত তা করতে পারেনি৷ ঋতব্রতর মন্তব্য, চা বাগানের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রের ১ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার কথা ছিল।
সেই টাকাও দেয়নি কেন্দ্র, দাবি করেছেন রাজ্য শাসকদলের ট্রেড ইউনিয়নের রাজ্য সভাপতি। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্র সরকার চা বাগান শ্রমিকদের পিএফ নিয়ে সীমাহীন দুর্নীতি করেছে। এনিয়ে কেন্দ্র সরকারের কোনও ভূমিকা নেই। মোদির জুমলা এবং মিথ্যাচারকে রাজু বিস্টা, জন বারলা আরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বামফ্রন্ট আমলে চা বাগান লিজ দেওয়া নিয়ে যথেচ্ছ দুর্নীতি হয়েছে বলেও ঋতব্রত দাবি করেছেন। সকলেই ঢালাও মিথ্যাচার করে গিয়েছে এবং এখনও একটি দল তারই রেশ বয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বন্ধ চা শ্রমিকদের ফাউলাই দিয়ে যাচ্ছেন।
আইএনটিটিইউসি’র রাজ্য সভাপতির মন্তব্য, এরই বিরুদ্ধে চা বাগানে সচেতনতা গড়ে তুলতে সংগঠনের মূল নেতাদের নিয়ে প্রশিক্ষণ শিবির চলতি মাসে ১৯ তারিখ নাগরাকাটা থেকে শুরু হয়েছে। এদিন বিধাননগরে দার্জিলিং (সমতল) জেলার ৪২টি চা বাগানের নেতাদের নিয়ে শিবির করা হল। এই ধারাবাহিক কর্মসূচি চলবে। মমতা বন্দোপাধ্যায় চা বাগান নিয়ে অনেক করেছেন, এখনও করে চলেছেন। রাজ্যের ১১৩টি চা বাগানে ক্রেস অথবা অ্যাম্বুলেন্স সহ প্রাইমারি হেলথ সেন্টার করা হচ্ছে। এগুলি রাজ্য সরকারের কথা নয়, তবুও মানুষের পাশে দাঁড়ানোর স্বার্থে রাজ্য সরকার কাজ করছে বলে ঋতব্রত জানান।
আরও পড়ুন: চা শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের হিসেব দেওয়া হচ্ছে না, শিলিগুড়িতে অভিযোগ ঋতব্রতর
মাঝেমাঝেই চা বাগানের মালিক পালিয়ে যাচ্ছে। এইসবের বিরুদ্ধে গ্রুপ অফ মিনিস্টারের যে বোর্ড তৈরি করা হয়েছে তাঁরা কড়া সিদ্ধান্ত নেবেন বলে সংগঠনের রাজ্য সভাপতি মন্তব্য করেন। তাঁর কথা, এতে শ্রমিকবান্ধব এবং শিল্পবান্ধব পরিবেশ তৈরি হবে। পাশাপাশি, লিজ দেওয়ার বিষয়ে আরও কড়া হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মত প্রকাশ করেছেন। লোকসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে ঋতব্রতর মন্তব্য, মানুষ আগামী লোকসভা নির্বাচনে সরকারের কাজের নিরিখে নিজের ভোট দেবেন। ভালো ফল হবে হবে তিনি দাবি করেন। এদিনের কর্মসূচিতে তৃণমূল কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলা (সমতল) সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ, তৃণমূল কংগ্রেসের ফাঁসিদেওয়া সাংগঠনিক ২ নম্বর ব্লক সভাপতি কাজল ঘোষ সহ বিশিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, চা বাগানগুলিতে এতদিন শ্রমিক এবং পড়ুয়াদের স্কুল যাওয়ার ক্ষেত্রে ট্রলি কিংবা ট্র্যাক্টরে করেই পরিবহন চলছিল৷ বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনাও ঘটেছে। এবারে সেই সমস্যা মেটাতে চা বাগানে বাস পরিষেবা চালু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। একথা জানিয়েছেন ঋতব্রত বন্দোপাধ্যায়। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এবং রাজ্য শ্রমদপ্তরের উদ্যোগে আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি জেলায় প্রথম দফায় ১০টি রুট চূড়ান্ত হয়েছে৷ জেলাশাসকই সেই রুট ঠিক করেছেন। খুব শীঘ্রই শ্রম দপ্তর এই পরিষেবা চালু করবে। কয়েকটি বাগানকে নিয়ে বাস চালানো হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামীতে, দার্জিলিং জেলাতেও এই পরিষেবা চালু হবে।
আরও খবর জানতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।