ফাঁসিদেওয়া: নিজেদের জমি দখলমুক্ত করতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হল বনদপ্তর। ফাঁসিদেওয়া ব্লকের ঘোষপুকুর সংলগ্ন কুচিয়াজোতে ত্রিহানা চা বাগানের মোহনলাল ডিভিশনের বনদপ্তরের ৩৮ একর জমি রয়েছে। একসময় ওই জায়গায় শালবন ছিল বলে জানা গিয়েছে৷ বনদপ্তরের দাবি, ওই জায়গায় শালগাছ কেটে অবৈধভাবে চা বাগান তৈরি করা হয়েছিল। সেই জমিতে ১৮ ডিসেম্বর খুঁটি পুঁতে দেয় বনদপ্তর। বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট জমি দখলমুক্ত করতে গিয়ে ফিরে আসতে হয়েছে বনদপ্তরকে।
আরও পড়ুন: সরকারি জমি দখল করে চা বাগান! উদ্ধার করল বন দপ্তর
অভিযোগ, বনদপ্তরের আধিকারিক এবং বনকর্মীদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান চা শ্রমিকরা। পাশাপাশি, চা বাগান তুলতে গেলে বাধা দেন চা শ্রমিকরা। শ্রমিকদের চাপের মুখে পড়ে পিছু হটতে হয় বনদপ্তরকে। এদিন কার্সিয়াং বনবিভাগের এডিএফও ভূপেন বিশ্বকর্মা ও ঘোষপুকুরের রেঞ্জার সোনম ভুটিয়া ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন৷ শ্রমিকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এই চা বাগানে কাজ করতে কোনও অসুবিধা হয়নি। গোটা বাগানে ৫টি গ্রামের প্রায় ১৬০০ জন শ্রমিক কাজ করে। হঠাৎ করে এভাবে চা গাছ উপড়ে ফেললে শ্রমিকদের জীবিকা কীভাবে চলবে? প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
দীর্ঘ সময় ধরে চা বাগান চলছে। বনদপ্তর কেন আগে কেন আসেনি বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন নীলা তিরকী, মঞ্জু তিরকী সহ সকল চা শ্রমিকরা। কুচিয়াজোতের পঞ্চায়ের সদস্য পান্নালাল সিংহের কথায়, গ্রামের মানুষদের চা শ্রমিকের কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। হঠাৎ করে চা বাগান তুলে দিলে, তাঁরা না খেয়ে মারা পড়বেন। তাই, আগে বনদপ্তর শ্রমিকদের কাজের নিশ্চয়তা প্রদান করুক। অপরদিকে, কার্সিয়াং বনবিভাগের ডিএফও হরিকৃষ্ণণ পিজে’র কথা, গোটা বিষয়টি নিয়ে চা বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। চা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছিল, কিন্তু তারা মানেননি। চা শ্রমিকদের জন্য ইকো পার্ক করে তাঁদের কর্মসংস্থান করার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।
শেষে তিনি মন্তব্য করেছেন, বনদপ্তর এখনও কিছু সিদ্ধান্ত নেয়নি। চা শ্রমিকদের নিয়েই কাজ করতে হবে। গোটা বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ত্রিহানা চা বাগানের ম্যানেজারের সুজয় মুখোপাধ্যায় মন্তব্য, এতদিন থেকে চা শ্রমিকরা কাজ করছেন। বাগান না থাকলে এত শ্রমিককে কাজ দেওয়া সম্ভব হবে না। সরকার যদি এই জমি লিজে দেয়, তাহলে কয়েকশো শ্রমিক কাজ হারাবেন না। ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল তৃণমূল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দোপাধ্যায়ের মন্তব্য, বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। সেইসঙ্গে, বনমন্ত্রীকেও শ্রমিকদের সমস্যার বিষয়ে জানাবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
আরও খবর জানতে ভিজিট করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।