অরুণ ঝা, ইসলামপুর: ইসলামপুর (Islampur) শহরের মাঝখান দিয়ে যাওয়া রাজ্য সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে মাত্র ১৫ দিন। তারই মাঝে এই কাজে যুক্তদের কাছ থেকে তোলাবাজির (extortion) অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। অবাক করার মতো ঘটনা হলেও এই তোলাবাজি করছে খোদ পুলিশ (Police)। কাজের জন্য মাটি নিয়ে ডাম্পার প্রতি ২০০ টাকা শ্রীকৃষ্ণপুর নাকা পয়েন্টে দিতেই হবে। প্রতিবাদ করলেই ডাম্পারচালকদের জুটছে বিভিন্ন কেসে থানায় ঢুকিয়ে দেওয়ার হুমকি। সোমবার রাত দুটো থেকে আড়াইটে পর্যন্ত ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে উত্তরবঙ্গ সংবাদের ক্যামেরায় এমন চিত্রই উঠে এসেছে। প্রায় ২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে। সরকারের উন্নয়নের কাজে খোদ পুলিশের তোলাবাজির এহেন ঘটনাকে হালকাভাবে নিতে রাজি নন ইসলামপুরের পুলিশ সুপার ডেন্ডুপ শেরপা। বিষয়টি জানিয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন। অন্যদিকে পূর্ত দপ্তরের (রোডস) ইসলামপুরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ভবতোষ দাস বলেন, ‘বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদারি সংস্থার কাছ থেকে এই ধরনের কোনও অভিযোগ পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি নিয়ে রিপোর্ট করব।’
সোমবার রাত প্রায় আড়াইটে। শ্রীকৃষ্ণপুর নাকা পয়েন্টে লাইন দিয়ে মাটি ও বালির ডাম্পার দাঁড়িয়ে। প্রায় প্রত্যেক ডাম্পারচালকের সঙ্গে একজন করে পুলিশকর্মী বচসায় ব্যস্ত। কাছে যেতেই দেখা গেল ডাম্পারের চালক হাতে ১০০ টাকা নিয়ে পুলিশকর্মীকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন। ছবি তোলার চেষ্টা করতেই চালক টাকা মুড়িয়ে নেন। দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশকর্মীরা ডাম্পারগুলিকে সড়কের একপাশে করার নির্দেশ দিয়ে সরে যান। জাতীয় সড়কে যানজট তৈরি করে এভাবে টাকা নিচ্ছেন কেন এই প্রশ্নের জবাব কোনও পুলিশকর্মী দেননি। শ্রীকৃষ্ণপুর কালীবাড়ির উলটো দিকে রাজ্য সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা মাটিবোঝাই ডাম্পারচালকদের বক্তব্য, ‘এই রোডের (রাজ্য সড়ক) কাজে মাটি নিয়ে যাচ্ছি স্যর। পুলিশ ২০০ টাকার নীচে কিছুতেই ছাড়তে চাইছেন না।’
বালিবোঝাই অন্য একটি ডাম্পারের চালক মুস্তাফা ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ‘সরকারি কাজে মাটি ফেলছি তাতেও পুলিশকে ২০০ টাকা দিতে হবে। এই অত্যাচারে রবিবার তো আমরা কাজই করতে পারিনি। প্রতিবাদ করলে কেস দিয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে দেব বলে হুমকি দিচ্ছে। আপনারা ১০০ টাকা করেই বা প্রতি ট্রিপে দিচ্ছেন কেন? মুস্তাফার জবাব, ‘ওভারলোডিং একটু-আধটু তো থাকেই।’ স্বভাবতই প্রশ্ন, ওভারলোডিং থাকলে পুলিশ নির্দিষ্ট মামলা দিচ্ছে না কেন? ট্রিপ প্রতি ২০০ টাকা তোলাবাজি হলে একরাতে মোট কত টাকা উঠছে? সেই টাকার বখরা যাচ্ছে কতদূর?