উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজ্যের প্রতিটি জেলার নেতৃত্বকে নিয়ে বৃহস্পতিবার বৈঠক করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন না তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সাম্প্রতিককালে তৃণমূলের সভায় দেখা যায়নি, সেটাই দেখা গিয়েছে নেতাজি ইন্ডোরের মমতার সভায়। সভায় দেখা যায়নি অভিষেকের কোনও ফ্লেক্স বা ব্যানার। শুধু মঞ্চই নয়, ইন্ডোরের চৌহদ্দিতেও দেখা যায়নি অভিষেকের ছবির কোনও ফ্লেক্স বা ব্যানার। আর এই বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার মুখ খুলেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। কুণাল বলেছিলেন, অভিষেক ছাড়া তৃণমূল অসম্পূর্ণ। কুণালের এই মন্তব্য ঘিরেই তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। বিতর্ক উঠতেই কুণালের সাফ জবাব, ‘‘ওটা শুক্রবার ছিল। এটা শনিবার। কী বলেছিলাম, ভুলে গিয়েছি।’’কুণালের মন্তব্যে স্বস্তিতে নেই দলও। ঘটনাচক্রে, কুণালের শুক্রবারের বক্তব্য তৃণমূলের মুখপত্রের শনিবারের প্রভাতী সংস্করণে ছাপা হয়নি।
কুণাল ঘোষের মন্তব্য ঘিরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। তাঁর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে অনেকেই খুঁজতে চাইছেন তৃণমূলে মমতা বনাম অভিষেকের দ্বন্দ্ব। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় চোখের সমস্যা জনিত কারণে সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারেননি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভার্চুয়াল মাধ্যমে সভায় কিছু ক্ষণ উপস্থিত ছিলেন। এদিনের সভায় অভিষেকের কোনও ছবি না থাকায় জল্পনা দানা বাঁধে। এ প্রসঙ্গে শুক্রবার কুণাল খোলাখুলি বলেন, ‘‘কারা এটা করেছেন, আমি বলতে পারব না। তবে এটা ঠিক হয়নি। এখন অভিষেকের ছবি ছাড়া তৃণমূলের মঞ্চ অসম্পূর্ণ। এটা হতে পারে না।’’
কুণাল আরও বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের নেত্রী। তিনিই দলের সম্পদ। তাঁর মুখ দেখেই মানুষ তৃণমূলকে ভোট দেন। তা যেমন ঠিক, তেমনই এটাও ঠিক যে, অভিষেক অনেক পরিশ্রম করে, অনেক আত্মত্যাগ করে উঠে এসেছেন। অভিষেক না থাকলে মমতাদি একলা পারবেন না তা যেমন নয়, তেমনই তৃণমূল না করলে অভিষেকের চলবে না এমনটাও নয়। ব্যাপারটা কখনওই মমতাদি বনাম অভিষেক নয়। ব্যাপারটা মমতাদি এবং অভিষেক। এক জনকে ঘিরে আবেগ রয়েছে। আর এক জন সময়ের কথা বিবেচনা করে দলের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা দেখছেন। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, যুবদের অনুপ্রাণিত করা, রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ার কাজ করছেন।” মমতার মঞ্চে অভিষেকের ছবি না থাকার জন্য নাম না করে সুব্রত বক্সিকেই দুষেছেন কুণাল।
রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্ক উঠতেই বিপাকে পড়ে গিয়েছেন কুণাল ঘোষ। এদিকে শুক্রবারের সব কথাই কুণাল ভুলে গিয়েছেন বলে শনিবার দাবি করেছেন কুণাল ঘোষ। তিনি বুঝে গিয়েছেন, তাঁর মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে দল। সেই সূত্রেই তাঁর শনিবারের বয়ান বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও কুণালের বক্তব্যের দায় তৃণমূলের নয় বলে অনেকেই মত পোষণ করেছেন।