নাগরাকাটা: রাগ করেই হোক বা অন্য কোনও কারণে। একদিন বাড়ি থেকে বেরিয়েই পড়েছিলেন ফালাকাটার (Falakata) কুঞ্জনগরের পুষ্পরানি দাস। অন্তত ৬০ কিলোমিটার পথ হেঁটে কীভাবে যে তিনি চলে আসেন জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) নাগরাকাটার (Nagrakata) আংরাভাসা এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কলাবাড়ি হৃদয়পুর জুনিয়ার হাই স্কুলের বারান্দায় সেই কাহিনী জানা নেই কারোরই। এক-দু দিন নয়। টানা ৮ বছর ধরে তাঁর ঠিকানা ছিল সেই স্কুলই। এরপরের কাহিনী হার মানাবে যে কোনও সিনেমাকেও।
বাড়ির লোক বহু জায়গায় খুঁজেও কোনও সন্ধান পাননি পুষ্পরানির। একরকম হালই ছেড়ে দিয়েছিলেন তাঁরা। সেই পুষ্পরানি ফিরে পেলেন স্বামী সহ নিজের ভরা সংসার। গোটা ঘটনার নেপথ্যের কুশীলব ধূপগুড়ির (Dhupguri) কালিরহাটের বাসিন্দা নীহার চন্দ্র সরকার। তিনি উত্তর হৃদয়পুর গ্রামে অবস্থিত ওই স্কুলেই শিক্ষকতা করেন। নিজের উদ্যোগেই নীহারবাবু মিড-ডে মিলের রাঁধুনি কৈনামতির থেকে জানতে পেরেছিলেন পুষ্পরানির বাড়ি কুঞ্জনগরে। নাম রানি। ব্যস, এইটুকু তথ্য সম্বল করে চলতে থাকে খোঁজ। শেষপর্যন্ত খুঁজে বের করেন পুষ্পরানির বাড়ি। আধারকার্ড দেখে নিশ্চিত করেন পরিচয়। এরপর সম্প্রতি পুষ্পরানির স্বামী সাধন দাস ও আরও কয়েকজন প্রতিবেশী স্কুলে আসেন। সাধনবাবুকে দেখতে পেয়েই এক লহমায় তাঁর স্ত্রী কাছে চলে আসেন। কয়েকশো মানুষের ভিড় জমে যায় সেখানে। উপহার ও পুষ্পবৃষ্টির মধ্যে নিজের বাড়ির পথ ধরেন দম্পতি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক উপেন্দ্র নাথ রায় জানান, এমন উদ্যোগ না থাকলে এই পুনর্মিলন সম্ভব ছিল না।