নাগরাকাটা: ‘হাব অ্যান্ড স্পোক’ মডেলে পড়াশোনা চালু হল জলপাইগুড়িতে। শুক্রবার বানারহাট হাইস্কুলের হাবে এসে মত বিনিময় করল লাগোয়া বল্কা পরিমল ও গার্লস হাইস্কুলের ৪০ জন ছাত্রছাত্রী। চেনা ছকের বাইরে গিয়ে এই নতুন ধাঁচের পড়াশোনার আঙ্গিক যে পড়ুয়াদের মনে ধরেছে তা তাঁদের উজ্জ্বল চোখে মুখেই ফুটে ওঠে। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অশ্বিনী রায় বলেন, ‘ধাপে ধাপে গোটা জেলাতেই নয়া মডেল ছড়িয়ে দেওয়া হবে।‘
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি জেলাতে আপাতত হাব বা সেন্টার অফ এক্সিলেন্সি-র স্কুল হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে বানারহাট ও জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলকে। এদিনই প্রথম বানারহাট হাই স্কুলের হাবে দুটি স্পোক স্কুলের পড়ুয়াদের পঠনপাঠন সহ আরো নানা সহপাঠক্রমিক কার্যাবলীতে অংশ গ্রহন করানোর মাধ্যমে নয়া মডেলটি আত্মপ্রকাশ করে। এদিন এলাকার গার্লস হাইস্কুলের অষ্টম ও নবম শ্রেণির ২০ জন ছাত্রী প্রথমার্ধে আসে। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন স্কুলের সহ শিক্ষিকা বিদ্যা প্রধান। দ্বিতীয়ার্ধে সহ শিক্ষক শৈলেন্দ্র সিং-এর তত্ত্বাবধানে আসে বল্কা পরিমল হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ২০ জন পড়ুয়া। নয়া স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে পরিচয় পর্ব শেষ হওয়ার পর শুরু হয় গোটা স্কুল চত্বর ঘুরে দেখার কাজ। স্কুলের বারান্দায় ফেলে দেওয়া জলের বোতল দিয়ে তৈরি করা ঝুলন্ত গাছ বাগান, বারন্দার বিভিন্ন দেওয়ালে আঁকা বিভিন্ন শিক্ষামূলক ছবির প্রতিটির অর্থ, বাইরে টাঙিয়ে রাখা ত্রিমাত্রিক শিক্ষাপকরণ বা টিএলএম, বিভিন্ন মণীষীদের ছবির সঙ্গে পরিচয়, ভূগোল-জীবন বিজ্ঞান ও ভৌত বিজ্ঞানের ল্যাবরেটরিতে নিয়ে গিয়ে হাতেকলমে কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখানো সহ নানা ধরনের কাজ ছাত্রছাত্রীরা করে।
বানারহাট হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকল্যাণ ভট্টাচার্য বলেন, ‘ধীরে ধীরে মডেলটি আরও ডালপালা মেলতে শুরু করলে বিশেষ করে চা বলয়ের ছাত্রছাত্রীরা যে দারুণভাবে উপকৃত হবে একথা হলফ করে বলতে পারি। এখন থেকে রুটিন তৈরি করে ধারাবাহিকভাবে এটা চলবে। আজকে যারা স্পোক স্কুল তারাও একদিন হাব হিসেবে কাজ করবে।‘
বানারহাট গার্লস স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা সুভদ্রা চিকবরাইক বলেন, ‘এদিন সকাল থেকেই ছাত্রীদের মধ্যে দারুণ উন্মাদনা ছিল।‘ সৃষ্টি ওরাওঁ নামে এক ছাত্রী বলেন, ‘এমনটা যে কখনও হবে তা ভাবতেই পারিনি।‘