অনীক চৌধুরী, জলপাইগুড়ি: মাসকয়েক আগের কথা। অ্যাম্বুল্যান্সের (Ambulance) অভাবে কাঁধে করে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল গোটা জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri)। সেই জেলায় দীর্ঘদিন পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে জলপাইগুড়ি পুরসভার (Jalpaiguri municipality) একাধিক অ্যাম্বুল্যান্স। অভিযোগ, এনিয়ে কোনও ভ্রূক্ষেপও নেই পুর প্রশাসনের।
জলপাইগুড়ি পুরসভা চত্বরেই ফেলে রাখা হয়েছে অ্যাম্বুল্যান্সগুলি। যদিও পুরপ্রধান পাপিয়া পালের সাফাই, ‘আমাদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা একেবারে বন্ধ নেই। শেষ বোর্ড মিটিংয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছে, সবক’টি অ্যাম্বুল্যান্স দ্রুত পরিষেবা দেওয়ার কাজ করবে। গাড়িগুলোরও সমস্যা নেই। সাধারণ মানুষ যাতে স্বল্পমূল্যে পরিষেবা পায়, সেদিকটাও আমরা খেয়াল রাখছি।’
সূত্রের খবর, পুরসভার মোট ছয়টি অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে। তার মধ্যে দুটি অ্যাম্বুল্যান্স শহরের দুই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিষেবা দিচ্ছে। বাকিগুলি সচল থাকলেও পরিষেবা মিলছে না। কিন্তু কেন? পুরসভার কেউই অবশ্য সে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি।
সমাজকর্মী সঞ্জয় চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘পুরসভার অ্যাম্বুল্যান্স মানুষের কাজে আসে না। বর্তমানে সেটি অফিশিয়াল কাজে বেশি ব্যবহৃত হয়।’ অ্যাম্বুল্যান্সগুলি বিশেষ করে রাতে পরিষেবা দিলে শহরবাসীর উপকার হবে বলে তাঁর মত।
রাজবাড়িপাড়ার বাসিন্দা উদয়ন মজুমদারের কথায়, ‘হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্সের চাহিদা বেশি থাকায় অধিকাংশ সময়ই তা পাওয়া যায় না। তখন আমাদের ভরসা করতে হয় বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের উপর। কিন্তু তারা ১০০০ টাকার কমে পরিষেবা দিতে চায় না। কোনও কোনও ক্ষেত্রে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত চেয়ে আদায় করা হয়। সেখানে পুরসভার সব অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা দিলে সমস্যা অনেকটাই মিটতে পারে।’
পুর কর্তৃপক্ষকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না সিপিএম (CPM) নেতা কৃষ্ণ সেন। পাপিয়ার সাফাইয়ের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলছেন, ‘পুরসভা যদি সত্যি বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে যে পুনরায় সব অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা শুরু করবে তাহলে আমরা সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। কিন্তু এটা যদি শুধু মিটিংয়েই সীমাবদ্ধ থাকে, তাহলে কিন্তু শহরবাসীর দুর্ভোগ মিটবে না।’