অনীক চৌধুরী, জলপাইগুড়ি: এখন কারও গান শুনতে ইচ্ছা করলে স্পটিফাই, গানা কিংবা ইউটিউবের বাইরে যেতে হয় না। বর্তমান যুগে অডিও ক্যাসেট, সিডি কিংবা ভিসিডি শব্দগুলো কেমন অচেনা শোনায়। ইন্টারনেটের উৎকর্ষে যেখানে প্রয়োজনীয়তা ফুরোচ্ছে টেলিভিশনেরও, সেখানে পুরোনো অডিও ক্যাসেট(Cassette) প্লেয়ার দিয়ে ৮ ও ৯-এর দশকের গান বাজিয়ে চলেছেন জলপাইগুড়ির(Jalpaiguri) রায়কতপাড়ার তরুণ আশিস চক্রবর্তী। কারণ, নস্টালজিয়ায় ডুবে থাকতে চান তিনি। বাঁচিয়ে রাখতে চান ‘সেই’ জমানাকে।
পাঁচশোরও বেশি অডিও ক্যাসেট রয়েছে আশিসের কাছে। তবে সবটাই তাঁর কালেকশন নয়। বাবা প্রদীপ চক্রবর্তীর কাছ থেকে এই ক্যাসেট শোনা এবং জমানোর অভ্যাস জন্মেছে তাঁর। আশিসের কথায়, ‘আমার ৮ ও ৯-এর দশকের গান খুব প্রিয়। সবসময়ই সেসব গান শুনি। প্রিয় গায়ক কুমার শানু। ক্যাসেটের গান শোনার মজাই আলাদা। বিভিন্ন জায়গা ঘুরে পুরোনো ক্যাসেট সংগ্রহ করতে ভালো লাগে। এছাড়াও স্যোশাল মিডিয়ার কল্যাণে আমি আমার এই শখের কথা হাজারো মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারি। সেখান থেকেও অনেকে যোগাযোগ করে আমায় তাঁদের জমানো ক্যাসেট পাঠান। বিশেষ করে একজনের নাম না নিলেই নয়। রাকেশ লাহিড়ি। তিনি আমাকে ক্যাসেট কালেকশনে অনেক সাহায্য করেন।’
কিন্তু, ক্যাসেটের রিল পেঁচিয়ে যাওয়া, কিংবা প্লেয়ার খারাপ হয়ে যাওয়ার সমস্যা থেকে উদ্ধার পান কীভাবে। প্রাইভেট কোম্পানির এই কর্মীর উত্তর, মূলত প্লেয়ারের ভেতরে একটি রোলিং রাবার ঢিলে হয়ে নষ্ট হয়ে যায়। তাই তিনি আগে থেকেই বেশকিছু ওই সরঞ্জাম কিনে পাউডার দিয়ে পাউচে রেখে দেন। যাতে গরম কিংবা ধুলোবালিতে নষ্ট না হয়। এছাড়া প্রতি মাসে দু’বার করে ক্যাসেট রোদে দেওয়া থেকে যা যা করণীয় তাই করেন আশিস এবং তাঁর স্ত্রী পামেলা।
পামেলা বলেন, ‘অডিও ক্যাসেট বাঁচিয়ে রাখার আশিসের এই প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করতে ভালো লাগে। আমি এবং পরিবারের সকলে ওকে সম্পূর্ণভাবে সাহায্য করি। ও কাজে বাইরে গেলেও আমরা ওর দেখানো উপায়ে টেপরেকর্ডার এবং ক্যাসেটের যত্ন নিই।’ হারিয়ে যাওয়া সেই সোনালি দিনগুলি নতুন প্রজন্মের কাছে ফিরিয়ে আনার আনন্দটাই আলাদা বলে পামেলার বক্তব্য।