কালিয়াগঞ্জঃ কে তৃণমূল নেতা? আর কেইবা বিজেপি নেতা? তা বুঝে উঠতে ভোটের আগে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে কালিয়াগঞ্জে। বিজেপি বিধায়কের প্যাডে প্রস্তাবিত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কলেজের ইউনিট কমিটির সদস্যদের নাম। এই তালিকার নীচে রয়েছে জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতির সিলমোহর। এই ঘটনায় কে বিজেপি আর কে তৃণমূল তা ঠাহর করতে পারছেন না কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দারা।
জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি রন্তু দাস তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় জেলার একাধিক কলেজ ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটি সন্মূখে আনেন। তাতে, অনান্য কলেজের পাশাপাশি কালিয়াগঞ্জ কলেজের টিএমসিপি ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটি সামনে আসে। বিষয়টি নিয়ে তাঁর বক্তব্য কি? তা শোনার জন্য বারংবার রন্তু দাসকে ফোন করা হলে উনি কল রিসিভ করেননি।
অবশ্য, সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কালিয়াগঞ্জ কলেজ টিএমসিপি’র সভাপতি কার্তিক মোদকের বক্তব্য, ‘জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি রন্তু দাসের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেই আমি জানতে পারলাম। তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক সৌমেন রায়ের পাঠানো প্রস্তাবিত কমিটিতেই সিলমোহর দিয়েছেন রন্তু দাস’।
২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর। সে সময় তৃণমূলের অলিন্দে ছিলেন কালিয়াগঞ্জের দলবদলু বিধায়ক সৌমেন রায়। ওই তারিখে নিজের বিধায়ক প্যাডে উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল ছাত্র সভাপতিকে উদ্দেশ্য করে তৃণমূল সমর্থিত কালিয়াগঞ্জ কলেজ ইউনিটের ২১ জনের একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি পাঠান। ইতিমধ্যে, হঠাৎ তৃণমূল ছেড়ে ফের বিজেপিতে ডুব মারেন কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়। গেরুয়া শিবিরে চলে যাওয়ার প্রায় দুই সপ্তাহ কেটে গেলেও সৌমেন রায়ের পাঠানো প্রস্তাবিত কমিটিতেই সিলমোহর দিলেন উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি রন্তু দাস।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের বিজেপিতে যোগ দেওয়া বিধায়কের প্রস্তাবিত কমিটিতে তৃণমূলের সিলমোহর পড়তেই বিষয়টি কালিয়াগঞ্জে রাজনৈতিক চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। চর্চায় উঠে আসে, ‘এ রাজ্যে যাহাই তৃণমূল, তাহাই বিজেপি’। লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পরে কার্যত ক্রিজের বাইরে এসে এমন ফুলটস বলে ছয় মারতে ভুল করলো না কংগ্রেস ও লাল ঝান্ডার দল।
উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত তৃণমূল ও বিজেপিকে এক হাতে নিয়ে জানান, ‘এই দুটি দলের কোনও নীতি, আদর্শ বলতে কিছুই নেই। এরা শুধু বাংলার মানুষকে ধোকা দেওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকে৷ অনেকদিন আগেই এই দুটি দল যে এক থালায় ভাত খায় তা আমরা জনগনকে বোঝানোর চেষ্টা করে এসেছি। এখন তার প্রমাণ জনসমক্ষে আসছে। আগামী লোকসভা নির্বাচনে বাংলার মানুষ এর যোগ্য জবাব দিবে।’
বামের শিক্ষক নেতা অয়ন দত্তের বক্তব্য, ‘বিজেপি ও তৃণমূল হল হরিহর আত্মা। দীর্ঘদিন ধরেই এদের মধ্যে মধুর সম্পর্ক রয়েছে। অন্ধকার থেকে আলোয় এসে পড়েছে এদের গোপন সম্পর্কের কথা। বাংলার মানুষও প্রস্তুত এদের যোগ্য জবাব দিতে।’