মিঠুন ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: সেতু সমস্যায় জেরবার রাজগঞ্জ (Rajganj) ব্লকের আমবাড়ি ও সংলগ্ন এলাকা। প্রায় দু’বছর ধরে সাহুডাঙ্গি-গজলডোবার মাঝে করতোয়া সেতুটি (Karatoya bridge) বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ফলে সেটাকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিছুটা দূরে শিমুলগুড়ি এলাকায় নিম নদীতেও সেতু নেই। একটা কাঠের সাঁকো ছিল, সেটা ঠিক কবে ভেসে চলে গিয়েছে, মনে করতে পারছেন না স্থানীয়রাও। ফলে মান্তাদারি গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি বড় অংশের মানুষকে চার থেকে আট কিলোমিটার ঘুরে আমবাড়ি আসতে হয়। বন্ধ রয়েছে গজলডোবা যাওয়ার ক্যানাল ব্রিজটিও। ওদলাবাড়ির বাসিন্দা সঞ্জয় বসুর অফিস শিলিগুড়ি মহকুমার শিবমন্দিরে। ফলে রোজের যাতায়াতে তাঁকে ভীষণ সমস্যার মুখে পড়তে হয়। বললেন, ‘করতোয়া সেতু বন্ধ থাকায় কয়েক কিলোমিটার ঘুরপথে আমবাড়ি হয়ে যাওয়া-আসা করতে হয়। এতে সময়ও নষ্ট হচ্ছে, টাকাও।’ সেখানকার রেলগেট বন্ধ থাকাটাও একটা বিশাল বড় সমস্যা। মাঝেমধ্যে এক-দেড় ঘণ্টা সময় নষ্ট হওয়াও অস্বাভাবিক কিছু না, জানালেন ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।
যদিও তিনটি সেতুই নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে বলে পূর্ত দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। দপ্তরের জলপাইগুড়ির সিনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার দীপককুমার সিং বলেন, ‘গজলডোবা যাওয়ার পথে করতোয়া সেতু এবং শিমুলগুড়ির নিম নদীতে সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ক্যানাল ব্রিজটিও নতুনভাবে তৈরি করা হবে।’ করতোয়া এবং নিম নদীর সেতুর জন্য প্রায় ১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। দুটি কাজেরই বরাত পেয়েছে কলকাতার একটি সংস্থা। সেতু দুটি তৈরি হতে প্রায় আট মাসের মতো সময় লাগবে বলে বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদারি সংস্থা সূত্রে খবর।
বিপজ্জনক ক্যানাল ব্রিজটি সম্প্রতি প্রশাসনের তরফে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পূর্ত দপ্তর এই ব্রিজ দিয়ে যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করেছে। তারপরেও বাইক, টোটো সহ বিভিন্ন ছোট গাড়ি ওই ব্রিজ পারাপার করছে। জানা গিয়েছে, ব্রিজের কাজ শেষ হতে লাগবে প্রায় দুই বছর। ফলে এখনই এই এলাকায় ভোগান্তি কমছে না বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল।
শিমুলগুড়িতে ২৫ বছর বামেদের জনপ্রতিনিধি থাকা কুমার পূর্ণেন্দুনারায়ণের কথায়, ‘সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। চাইব, সঠিক মান অনুযায়ী কাজ হোক।’ সেতুর অভাবে বাসিন্দাদের চার থেকে আট কিলোমিটার ঘুরপথে আমবাড়ি যেতে হয়। স্থানীয় এক বাসিন্দা রাজীব রায় জানান, ‘দশ-পনেরো দিন আগে সেতুর কাজ হবে বলে কিছু সামগ্রী আনা হয়েছিল। কাজেও হাত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দু’-একদিন পর হঠাৎই কাজ বন্ধ হয়ে যায়।’