ইসলামপুরঃ যাঁর জন্য একসময় তৃণমূল ছেড়েছিলেন। দিনকয়েক আগেও যাঁর মুণ্ডুপাত করতে কসুর করেননি। মঙ্গলবার ইসলামপুরের (Islampur) সেই ‘বিদ্রোহী’ বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী (Abdul Karim Chowdhury) সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে পুরপ্রধান তথা দলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালকে (Kanaialal Agarwal) প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন। অনুষ্ঠান মঞ্চে করিম-কানাইয়ার খুনশুটি, খোশমেজাজের দোস্তি স্বভাবতই রাজনৈতিক মহলে চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। যুযুধান দুই নেতার এই দোস্তি কতদিন টিকবে প্রশ্ন করতেই করিমের সাফ জবাব, ‘আমি আজ কানাইয়াকে বলেছি তুমি আমাকে ছেড়ে দিয়েছ।’ একই প্রশ্নে কানাইয়ার প্রতিক্রিয়া, ‘আমার দিক থেকে কোনওদিনই কোনও সমস্যা ছিল না। আমাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব নেই।’ দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি নেতাদের দলীয় কোন্দল মিটিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। স্বভাবতই চর্চা চলছে, তাহলে কী লোকসভা ভোটের আগে নেত্রীকে খুশি করতেই দুই শিবিরের নেতারা বন্ধুত্বের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
এদিন সরকারি আয়ুষমেলার আয়োজন করা হয়েছিল। এই উপলক্ষ্যে একটি র্যালি ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতাল চত্বর থেকে বেরিয়ে শহর পরিক্রমা করে নিউটাউন রোডের মুক্তমঞ্চে পৌঁছায়। অনুষ্ঠান মঞ্চে এদিন করিম ও কানাইয়াকে একসঙ্গে পাশাপাশি বসে থাকতে দেখা গিয়েছে। দুই নেতার খোশমেজাজ ছিল চোখে পড়ার মতো।
মঞ্চে ভাষণ দিতে উঠে করিম উন্নয়নের কথা বলতে গিয়ে কানাইয়াকে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন। করিম বলেন, ‘এত সুন্দর মুক্তমঞ্চ কানাইয়া তৈরি করেছে তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ। এর ফলে শহরের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের লোকজন উপকৃত হবেন। ভাষণ শেষে করিম-কানাইয়া মঞ্চে পাশাপাশি বসে অনেকক্ষণ ধরে হাসাহাসি করেছেন। সাম্প্রতিক অতীতে ইসলামপুরের রাজনীতিতে দুই নেতার এই মুডের চিত্র কার্যত বিরল।
উত্তরবঙ্গ সংবাদের প্রশ্নের উত্তরে করিম বলেছেন, ‘কানাইয়া উন্নয়নের যে কাজ করেছেন তার জন্য ওঁকে ধন্যবাদ দিয়েছি। সেটা ওঁর প্রাপ্য। কারণ যে কাজ করবেন তাঁকে ধন্যবাদ দিতেই হবে। ইসলামপুরের উন্নয়ন আমিও চাই। আমি কানাইয়াকে বলেছি, আমার থেকে দূরে সরে গিয়ে তুমি আমাকে একা করে দিয়েছ। এটা ঠিক হচ্ছে না।’ আগামীদিনে তাহলে কি করিম-কানাইয়া দোস্তি আরও গাঢ় হতে চলেছে? এর উত্তরে করিমের জবাব, আমার কোনও আপত্তি নেই। আমি বরাবরই ওঁকে পাশে রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নিজের কারণেই উনি সরে গিয়েছিলেন। অন্যায়কারীদের নিয়ে কানাইয়া চলুন সেটা আমি চাই না। এই প্রসঙ্গে কানাইয়ার বক্তব্য, করিম সাহেবের সঙ্গে আমার কোনও দ্বন্দ্ব নেই। মতপার্থক্য থাকতেই পারে। গত বছর আমি ওঁর বাড়ি পর্যন্ত গিয়েছিলাম। দোস্তির প্রশ্নে তাঁর দিক থেকেও কোনও সমস্যা নেই বলে জানান কানাইয়া।