উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে চাকরী হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও অশিক্ষককর্মী। আর তারপর থেকেই বিভিন্ন নির্বাচনি সভামঞ্চ থেকে বিচারব্যবস্থাকে আক্রমণ করে চলেছেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবারও পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে দলীয় সভা থেকে কলকাতা হাইকোর্টকে তুলোধোনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিজেপি কিনে নিয়েছে হাইকোর্টকে। বাংলায় কি সব স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে? টিচারের চাকরি কি আর হবে না?’
বুধবার বোলপুর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অসিত মালের সমর্থনে সভা করেন মমতা। সেখানে বিজেপি ও বিচারব্যবস্থাকে একই আসনে বসিয়ে আক্রমণ করেন তিনি। আদালতকে বিজেপির মহাতীর্থ কেন্দ্র বলে উল্লেখ করেন। মমতা বলেন, ‘ভাত দেওয়ার ক্ষমতা নেই, কিল মারার গোঁসাই। নিজেরা চাকরি দেয় না, কোন ডিপার্টমেন্ট কী ভাবে চাকরি দেয় সেটা সেই ডিপার্টমেন্টের ব্যাপার। আমি ইন্টারফেয়ার করি না। কিন্তু আমার খারাপ লেগেছে। বারে বারে দেখছি। বলছে ২৬ হাজার টিচারকে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। আবার বলছে ১ মাসের মধ্যে ১২ শতাংশ সুদ দিয়ে তাদের সব টাকা ফেরত দিতে হবে। বিজেপি নেতাদের বলি, যারা এই সব কেস করে শিক্ষক – শিক্ষিকার চাকরি খাচ্ছো সারা জীবন সরকারি চাকরি করার পর যদি সেই টাকা ফেরত দিতে বলা হয়, পারবেন দিতে?’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার হাতে এখনও সরকারি দপ্তরে ১০ লক্ষ এক্সট্রা চাকরি আছে। বিজেপি গেলেই এই কোর্ট আটকে দিচ্ছে। বিজেপির একটা মহাতীর্থ কেন্দ্র কলকাতা হাইকোর্ট। বিজেপি ছাড়া অন্য কেউ যদি বিচার চায় তাদের জন্য দরজা বন্ধ’।
বিচারব্যবস্থাকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা আজ বিজেপির কথায় মানুষের চাকরি খেয়ে নিচ্ছে। ডাকাতদের জামিন দিয়ে দিচ্ছে। মাফিয়াদের জামিন দিয়ে দিচ্ছে। আর সবচেয়ে বড় গদ্দারের নামে মার্ডার কেস থাকা সত্বেও বলছে, তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। এটা কি আইন? যদি কোনও অন্যায় কেউ করে থাকে, তুমি স্কুটিনি করতে। তুমি পরামর্শ দিতে। তা না করে এক কথায় ২৬ হাজার ছেলে মেয়ের চাকরি খেয়ে নিয়ে, এটা কি মজার মুলুক?’
আদালতের রায়ের প্রতিবাদে বিরোধীদের ভোট না দেওয়ার আহ্বান করেন মমতা। বলেন, ‘শিক্ষক – শিক্ষিকাদের বলব, আজকে ২৬ হাজার ছেলে মেয়ের চাকরি খেয়ে নেওয়ার প্রতিবাদে কোনও শিক্ষক-শিক্ষকা, সরকারি কর্মচারী একটি ভোটও আর বিজেপিকে দেবেন না। সিপিএম কংগ্রেসকে দেবেন না। এরা চাকরি খেয়ে নিচ্ছে। আপনার ভবিষ্যৎ খেয়ে নিচ্ছে। কে জানে কাল আবার চাকরি খাবে। এরা যত তাড়াতাড়ি বিদায় নেয় তত মঙ্গল’।
এর পরই সরাসরি কলকাতা হাইকোর্টকে নিশানা করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘এরা কোর্ট কিনে নিয়েছে। সিবিআই কিনে নিয়েছে। আমি সুপ্রিম কোর্টের কথা বলছি না। সুপ্রিম কোর্টের কাছে আমরা এখনও বিচারের আশায় আছি। এরা হাইকোর্ট কিনে নিয়েছে। এরা সিবিআই কিনে নিয়েছে। এরা এনআইএ কিনে নিয়েছে। এরা বিএসএফ কিনে নিয়েছে। দূরদর্শন দেখবেন, তার রংটাও গেরুয়া করে দিয়েছে’।