জিষ্ণু চক্রবর্তী, গয়েরকাটা: প্রখর রোদ ও অনাবৃষ্টির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে উত্তরের জঙ্গলে। জলপাইগুড়ি জেলার অন্যতম বৃহৎ মোরাঘাট বনাঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হওয়া ঝোরাগুলি শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে। ফলে পশুপাখিদের তৃষ্ণা নিবারণে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে চিন্তিত নানা মহল। বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা সহ পরিবশপ্রেমীরা। তাঁদের দাবি, বনাঞ্চলে কৃত্রিম জলাশয়ের সংখ্যা বাড়ানো হোক।
মোরাঘাট জঙ্গলের আয়তন প্রায় ছয় হাজার হেক্টর। জঙ্গলে চারটি বিট অফিস রয়েছে। কমবেশি সব বিটের আওতায় থাকা ঝোরাগুলির কিছু একদম শুকিয়ে গিয়েছে, কিছু বা শুকিয়ে যেতে বসেছে। হাতিনালা, আম্বার মতো এই ঝোরাগুলি থেকেই তৃষ্ণা নিবারণ করে হাতি, লেপার্ড, হরিণ, বাইসন, বুনো শুয়োর, ময়ূর সহ বিভিন্ন পশুপাখি। পরিবেশপ্রেমীরা বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন। জঙ্গলে জলের অভাবে বন্যরা লোকালয়ে চলে আসছে বলেও খবর মিলেছে। ফলে বাড়ছে মানুষ–বন্যপ্রাণী সংঘাত।
ডুয়ার্সের পরিবেশপ্রেমী সংস্থা আরণ্যকের সম্পাদক কৌশিক বাড়ুই বলেন, ‘বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে জলাশয়গুলো ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাচ্ছে। গত দু’তিন বছর ধরেই এই ধারা দেখা যাচ্ছে। ফলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বন্যপ্রাণীদের। জঙ্গলে কৃত্রিম জলাশয়ের সংখ্যা আরও বাড়ানো হলে এই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।’ অন্য সংস্থা ন্যাস-এর কর্মকর্তা নফসর আলি বলেন, ‘মানুষের মতোই প্রচণ্ড গরমে বন্যপ্রাণীদেরও খুবই কষ্ট হয়। তখন তারা নদী বা ঝোরাগুলি খোঁজে মূলত স্নান করে শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য। তবে জঙ্গলের ঝোরাগুলি শুকিয়ে যাওয়া জঙ্গলের পক্ষে শুভ সংবাদ নয়। দ্রুত বন দপ্তরের এব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা উচিত।’
যদিও মোরাঘাট রেঞ্জ অফিসার রাজকুমার পালের মতে, জঙ্গলে যে বড় নদীগুলো আছে সেগুলি বন্যপ্রাণীদের জলের প্রয়োজন মেটানোর পক্ষে যথেষ্ট। এছাড়া কৃত্রিম জলশয়গুলির সংস্কার সহ গরম সংক্রান্ত নানা বিষয় নজরদারিতে রাখা হয়ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।