নাগরাকাটাঃ জনবসতি লাগোয়া ছোট চা বাগানে ঘাঁটি গেড়েছিল চিতাবাঘ। কাজ করতে গিয়ে বুনোটিকে শুয়ে থাকতে দেখে তখন আত্মারাম খাঁচা কান্দনা সাঁওতাল নামে এক শ্রমিকের। তিনি আবার কথা বলতে পারেন না। চিতাবাঘটি তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ার চেষ্টা করলেও কোন রকমে পাশ কাটিয়ে পালিয়ে আসেন। আকারে ইঙ্গিতে তিনি বিষয়টি বুঝিয়ে দেন ওই চা বাগানের মালকিন মেরিনা কুজুরকে। সঙ্গে সঙ্গে মেরিনা খবর দেন বন দপ্তরকে। চা বাগানে চিতাবাঘ থাকার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ঘটনাস্থলে ভিড় জমান শ’য়ে শ’য়ে মানুষ। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে আসেন বন্যপ্রাণ শাখার খুনিয়া, মালবাজার ও বিন্নাগুড়ি এই ৩ রেঞ্জের বনকর্মীরা। চা বাগানে পৌঁছেই তাঁরা প্রথমে জাল দিয়ে এলাকাটি ঘিরে দেন। এরপর ঘুমপাড়ানি গুলি ছুঁড়ে কাবু করে চিতাবাঘটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটে নাগরাকাটার সুলকাপাড়ার মংরুপাড়ায়। খুনিয়ার রেঞ্জার সজল দে বলেন, সাব অ্যাডাল্ট স্ত্রী বুনোটি বর্তমানে গরুমারার প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রয়েছে। সেখানে শারীরিক সুস্থতা দেখে তারপর ফের জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে চিতাবাঘটিকে।
যে চা বাগানটিতে এদিন চিতাবাঘ দেখা যায় পাশেই ঘনবসতি এলাকা। মংরুপাড়া ছাড়াও জয়ন্তী পল্লীর মত আরও একটি গ্রাম রয়েছে। যে কারণে বন দপ্তর কোনও ঝুঁকি নেয় নি। জাল দিয়ে স্থানটিকে ঘিরে ফেলার পর বনকর্মীরা নিজে খাঁচার ভেতরে ঢুকে বাগানের ভেতর ঢোকেন। চিতাবাঘটির অবস্থান দেখে নিয়ে এরপর ঘুমপাড়ানি গুলি ছোঁড়েন। চিতাবাঘটিকে কাবু করতে প্রায় ঘন্টা চারেক তাঁদের কসরত করতে হয়। বুনোটিকে বাগে আনার পাশাপাশি তাঁদের বেগ পেতে হয় অত্যুৎসাহী জনতার ভিড় সামলাতে গিয়ে। পুলিশও সেখানে ছুটে আসে। এলাকার রিজওয়ান আলম নামে এক বাসিন্দা বলেন, চিতাবাঘটি কারও কোনও ক্ষতি করে নি। তবে পাশেই লোকালয় রয়েছে। সেকারণে সমস্ত দিক বিবেচনা করে জন্তুটিকে ধরে নিয়ে যাওয়ায় এখন আমরা নিশ্চিন্ত।