মণীন্দ্রনারায়ণ সিংহ, আলিপুরদুয়ার: গতবারের লড়াইটা সাতজনের মধ্যে ছিল। এবারে আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) লোকসভা কেন্দ্রে মোট ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গতবারের ভোটে মূল লড়াই ছিল বিজেপি ও তৃণমূল প্রার্থীর মধ্যে। ২০১৯ সালের লোকসভায় বাম এবং কংগ্রেস আলাদাভাবে প্রার্থী দিলেও এবারের লড়াইয়ের ময়দানে থাকল না কংগ্রেস। গতবারের প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি ও তৃণমূল এবারেও একে অপরকে প্রচারে টেক্কা দিতে মরিয়া। যদিও এবার অন্যান্য দল এবং নির্দল প্রার্থীরা কতাটা ভোট কাটাকাটি করতে পারেন, সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল। কংগ্রেস এবারে প্রার্থী না দেওয়ায় দলের কর্মী-সমর্থকদের ভোট কোন বাক্সে পড়বে, তা নিয়েও ধোঁয়াশা থাকছে।
আলিপুরদুয়ারে এবারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বাইরেও সরাসরি দুই নির্দল প্রার্থী লড়ছেন। তাঁরাও এবারের ভোটে (Lok Sabha Election 2024) একটা ফ্যাক্টর হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। গত বিধানসভায় মাদারিহাটের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রাজেশ লাকড়ার অনুগামী পরিমল ওরাওঁ নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়ছেন। তার হয়ে প্রচারে নেমেছেন খোদ রাজেশ। রাজেশ জানিয়েছেন, তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই। তাঁর আশা, পরিমল ভালো ফল করবেন। অন্যদিকে, চা শ্রমিকদের হয়ে আন্দোলনকারী অর্জুন ইন্দুওয়ার নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়ছেন। তাঁর দাবি, চা শ্রমিকদের বঞ্চনা নিয়ে রাজ্য-কেন্দ্র কারও মাথাব্যথা নেই। চা শ্রমিক কৃষকদের স্বার্থে তাঁর লড়াই। অন্তত ৫ লক্ষ ভোট পাওয়ার আশায় রয়েছেন ওই নির্দল প্রার্থী।
তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) ও বিজেপির (BJP) ভোটব্যাংকে আদৌ কি ধাক্কা দিতে পারেন স্থানীয় রাজনৈতিক দল ও নির্দল প্রার্থীরা? সেটা হলে অনেক হিসেবনিকেশ বদলে যেতে পারে। গত লোকসভা নির্বাচনে ৭,৫০,৮০৪ ভোট পেয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী জন বারলা। প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দশরথ তিরকি পেয়েছিলেন ৫,০৬,৮১৫ ভোট। বাম প্রার্থী মিলি ওরাওঁ ৫৪,০১০ ভোট এবং কংগ্রেস প্রার্থী মোহনলাল বসুমাতা ২৭,৪২৭ ভোট পেয়েছিলেন। নোটায় ২১,১৭৫ ভোট পড়লেও অন্য প্রার্থীরা ১৫ হাজারের নীচে ভোট পেয়েছিলেন।
এবারে আলিপুরদুয়ার আসনে কংগ্রেস প্রার্থী দেয়নি, বামের প্রার্থী মিলি ওরাওঁ এবারেও লড়ছেন। বিএসপি, এসইউসিআই, নর্থবেঙ্গল পিপলস পার্টি, কিষান মজদুর সংঘর্ষ পার্টি, কামতাপুর পিপলস পার্টি (ইউনাইটেড), গণসুরক্ষা পার্টির প্রার্থীরা লড়ছেন। বাম প্রার্থীর হয়ে কংগ্রেস ভোটের ময়দানে আদৌ নামবে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। দু’একদিনের মধ্যে বসে আলোচনা করে তারা সিদ্ধান্ত নেবে। স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলি স্থানীয় চা বাগান থেকে কৃষকদের স্বার্থে লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছে। গতবারে দুই মূল প্রতিদ্বন্দ্বী এবারেও অন্যদের থেকে প্রচারে এগিয়ে রয়েছেন। ফলে লোকসভা ভোটে তৃণমূল ও বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে অন্যরা কতটা ভোট নিজেদের বাক্সে টানতে পারেন, সেই হিসেবনিকেশ করছেন দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের ভোট ম্যানেজাররা।