রায়গঞ্জঃ তাঁরা প্রত্যেকেই জেনারেশন জেড প্রতিনিধি। ডিজিটাল গ্যাজেটে অভ্যস্ত। এআই প্রযুক্তি ব্যবহার থেকে শুরু করে পড়াশোনার ফাঁকে সোশ্যাল মিডিয়াকে কেরিয়ায়ের বিকল্প অপশন করে নিতে পটু তাঁরা। দুনিয়ার হালহকিকত নিয়েও তাঁরা ওয়াকিবহাল। তাঁদের অনেকে জীবনে প্রথমবার ভোট দেবেন। কেউ আবার পঞ্চায়েত বা বিধানসভা নির্বাচনে ভোট দিলেও দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে প্রথম নিজের মতামত জানানোর সুযোগ পেয়েছেন। তবে একটি বিষয়ে নতুন প্রজন্মের ধারণা খুব স্পষ্ট। শুধু জমকালো প্রচার আর আশ্বাস নয়, প্রার্থীর বায়োডাটা আর ট্র্যাক রেকর্ড দেখেই ভোট দেবে ডিজিটাল যুগের যুবসমাজ। নেতাদের কথায় নয়, ইন্টারনেটে প্রার্থীর সমস্ত খোঁজখবর খুঁজে তবেই মতদান। শুধু প্রার্থী নয়, রাজনৈতিক দলের ধ্যানধারণা, নীতি ও মতাদর্শ নিয়েও খোঁজখবর নিচ্ছেন তাঁরা। এই কাজে তাঁদের বড় ভরসা মুঠোফোন। কোনও তথ্য যাচাই করতে অসুবিধে হলে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের প্রশ্ন করতেও ভুলছেন না। তাঁদের প্রশ্নের উত্তর ব্যাখ্যা করতে পেরে খুশি শিক্ষকরাও। শিক্ষকদের বক্তব্য, বর্তমান যুব সমাজ যেভাবে সমস্ত বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি নেতা ঠিক করতে খোঁজখবর রাখছে তা আগামী দিনের জন্য সত্যিই ইতিবাচক।
রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দেবাশিস বিশ্বাস বলছেন, ‘অনেক ছাত্রছাত্রী দল ও প্রার্থী বাছাইয়ের সঠিক পদ্ধতি, কোন দলের কী নীতি, কী আদর্শ জানতে চাইছেন। তাঁরা নিজেদের প্রতিনিধি বাছাই করতে দেখে নিচ্ছেন প্রার্থীর ইতিহাস। বর্তমান যুব সমাজ যে খুব সচেতন, এই প্রশ্নগুলির মধ্যেই তা স্পষ্ট।’
শিক্ষাবিদ তপন ব্রহ্ম বলেন, ‘আজকের যুব সমাজ দেশের ভবিষ্যতের পাশাপাশি সরকারে থাকা দল তাদের জন্য নতুন কী কী পরিকল্পনা করেছে, তার খোঁজ নিচ্ছে আমাদের কাছে। এই ধরণের প্রশ্ন সবার মধ্যেই থাকা উচিত।’
একদিকে যখন রায়গঞ্জ কেন্দ্রের বাসিন্দাদের একাংশ প্রার্থীদের জমকালো প্রচার ও শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য শুনে নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে অভ্যস্ত, ঠিক সেই সময় যুব সমাজের দাবি, ভাষণে আর চিঁড়ে ভিজবে না। বছরের পর বছর বাবা-কাকা কিংবা বাড়ির বাকিদের মুখে তাঁরা শুনে এসেছেন, নির্বাচনের প্রতিশ্রুতিই সার। কাজের কাজ কিছু হয় না। ভোট মিটলে এলাকায় দেখা যায় না নেতাদের।
বর্তমান সময়ে দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানের দিকে জোর দেওয়ার জন্য গড়ে তোলা উচিত সঠিক পরিকাঠামো। সেই কাজে কোন দল বেশি পারদর্শী সেটাই খতিয়ে দেখছেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী কণিকা রায়, সরফরাজ হোসেন, বীণা মণ্ডল, গার্গী বর্মন, চিরঞ্জিৎ দাস, মন্দর রায়রা। এমনকি প্রার্থীর ভাবমূর্তিও খতিয়ে দেখতে চান তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, ‘প্রথমবার ভোট দেওয়ার আগে প্রার্থী এবং তিনি যে দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, সেই দলের খোঁজ নিচ্ছি। একটি ভোটও মূল্যবান। তাই ভুল বোতাম টিপে ভোট নষ্ট করব না আমরা।’