উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প ও আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। তৃণমূলের এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তৃণমূলের দাবি এই দুই প্রকল্পে রাজ্যকে কত টাকা দিয়েছে তা শ্বেতপত্র আকারে প্রকাশ করুক কেন্দ্র। তৃণমূলের এই দাবি কর্ণপাত না করলেও গোটা দেশের কোন রাজ্যের কোন লোকসভা এলাকায় নরেন্দ্র মোদি সরকার কোন প্রকল্পে কী কী কাজ করেছে, তা অনলাইনের মাধ্যমে সামনে আনা হয়েছে। ‘শ্বেতপত্র ডট ইন’ নামে একটি পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে। তাতে ধাপে ধাপে এগোলে বিজেপির দাবি করা তথ্যের ভিডিয়ো এবং পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর থেকেই রাজ্যের আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজের কাজের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। এক পয়সাও বরাদ্দ করেনি মোদি সরকার। এ নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে শ্বেতপত্র প্রকাশের চ্যালেঞ্জও ছোড়েন অভিষেক। তিনি বিভিন্ন সভায় সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেছেন, ‘‘মিথ্যাচার করার জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকার জনগণের টাকা নষ্ট করছে। আমি বিজেপি নেতৃত্বকে আমার সঙ্গে মুখোমুখি তর্কে বসার চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। ২০২১ সালে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকে আবাস যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজের মতো প্রকল্পগুলিতে এক পয়সাও বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র। আমি যে ভুল, তা প্রমাণ করার জন্য বিজেপিকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি।’’ অভিষেকের এই চ্যালেঞ্জের পরেও শ্বেতপত্র প্রকাশ করেনি কেন্দ্র। তবে পালটা প্রতিক্রিয়ায় বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “আমি যদি বলি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শ্বেতপত্র প্রকাশ করে জমা দিন, দেবেন মুখ্যমন্ত্রী? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করছেন শ্বেতপত্র প্রকাশ করার জন্য। এ কথা তো রাজ্য সরকারের সচিবেরা কেন্দ্র সরকারকে বলতে পারলেন না! আদালতে বলতে পারলেন না।”
এই পরিস্থিতিতে অনলাইনে শ্বেতপত্র প্রকাশ করল বিজেপি। চালু করা হয়েছে ‘শ্বেতপত্র ডট ইন’ পোর্টাল। রাজ্যকে কোন খাতে কোন বছরে কত টাকা দেওয়া হয়েছে তা আলাদা করে বলা হয়নি এই পোর্টালে। প্রতিটি লোকসভা আসন ধরে ধরে সেখানে কোন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে কী কাজ হয়েছে বা কত জন তার সুবিধা পেয়েছেন তার হিসাব পেশ করা হয়েছে বিজেপির তরফে।
‘শ্বেতপত্র ডট ইন’ পোর্টালে দেখা যাচ্ছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালে অভিষেকের ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে জল জীবন মিশন প্রকল্পে ৪৫,৪৯৫ নলবাহিত পানীয় জলের কল হয়েছে। ১৪টি জনৌষধি কেন্দ্র থেকে স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্পে ২০১৪ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ৬৬,৪৯২টি শৌচাগার নির্মিত হয়েছে। আবাস যোজনা সেখানে ৫৫,২৮১টি বাড়ি তৈরি হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে। তৈরি হয়েছে ১০৯ কিলোমিটার প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তা। তবে অভিষেক ১০০ দিনের কাজ বাবদ রাজ্যের পাওনা নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছেন, তার উত্তর নেই এই পোর্টালে।