নাগরাকাটাঃ চা বাগানে যে সমস্ত সুযোগসুবিধা মিলছে তা কেন্দ্র সরকারেরই অবদান। অথচ রাজ্য সরকার সেসব নিজের নাম করে চালিয়ে দিচ্ছে। পাশাপাশি নানা পাওনা থেকেও শ্রমিকদের বঞ্চিত করছে। শনিবার নাগরাকাটার গ্রাসমোড় চা বাগানে নির্বাচনি প্রচারে এসে এমনই দাবি করলেন আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্গা। তিনি বলেন, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে চা বাগানে র্যাশন বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা দেখা করেছিলাম। এরপর মার্চ মাস থেকে পরিবার পিছু মাসে ৩৫ কিলোগ্রাম খাদ্যশস্য দেওয়া শুরু হয়। করোনার সময় থেকে শ্রমিকদের দেওয়া হচ্ছে মাথাপিছু আরও ৫ কিলোগ্রাম করে খাদ্য শস্য। এটা আগামী ৫ বছর চলবে। জ্বালানি কাঠ দেওয়া বাগানগুলি বন্ধ করে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগেই মহিলা শ্রমিকদের উজ্জ্বলা প্রকল্পে রান্নার গ্যাস দেওয়া হয়েছে। নয়তো শ্রমিকদের রান্নাঘরের উনুনই জ্বলত না। আগামীতে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসলে শ্রমিকদের মজুরি ৩৫০ টাকা করা হবে বলে সম্প্রতি মালবাজারের জনসভায় এসে বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন। মনোজ এদিন ওই বক্তব্যকে পূর্ণ সমর্থন জানান।
মনোজের অভিযোগ চা বাগানে এখন আর ছাতা, জুতো, ত্রিপল, কম্বলের মতো ফ্রিঞ্জ বেনেফিটগুলি দেওয়া হয় না। মেলে না চিকিৎসা পরিষেবা। নির্ধারিত টাস্কের চেয়ে কম পাতা তুললে মজুরি থেকে মালিকদের টাকা কেটে নেওয়ার বাড়বাড়ন্ত এই আমলেই। অতিরিক্ত পাতা তুললে যে ইনসেন্টিভ দেওয়া হয় তাতে কোন বৃদ্ধি নেই ২০১৫ সাল থেকে। চা বাগানে যা উন্নয়নের কাজ তা কেন্দ্রেরই অবদান বোঝাতে গিয়ে বলেন, রাস্তাঘাট, পানীয় জল, শৌচালয়, ড্রেন সমস্ত কেন্দ্র সরকারের টাকাতেই। অথচ রাজ্য তা নিজের বলে চালিয়ে নেয়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য সরকার চা শ্রমিকদের জমির পাট্টা প্রদানের যে প্রকল্প চালু করেছেন তা বিভ্রান্তিকর কর বলেও মনোজ দাবি করেছেন। তিনি বলেন, পাট্টার নামে ধোঁকা দেওয়া হচ্ছে। ওই পাট্টায় কিছু হবে না। আমাদের পুরো জমির অধিকার চাই। পাহাড়ের শ্রমিকরা ওই পাট্টা নিতে অস্বীকার করেছেন। এখানে যে পাট্টা দেওয়া হচ্ছে তা হস্তান্তরযোগ্য নয় বলে নথিতে লেখা থাকছে। এর অর্থ বাবা মারা গেলে ওই জমির ওপর ছেলেমেয়েদের আর কোন অধিকার থাকবে না?
এদিন মনোজ টিগ্গা নাগরাকাটার একাধিক এলাকায় প্রচার চালান। করেন জনসংযোগও। তাঁর সাথে ছিলেন শুক্রা মুন্ডা, মনোজ ভুজেল, সীমা কেরকেট্টা, লুইস কুজুর, বরুণ মিত্র, অরুণ ওয়াইবা, তন্ময় নার্জিনারির মতো নেতা নেত্রীরা।