সৌরভ দেব, জলপাইগুড়ি: একসঙ্গে ভোট (Lok Sabha Election 2024) দিল তিন প্রজন্ম- ঠাকুমা, বাবা, মেয়ে। সঙ্গে ছিল মা-ও। শুধু এই চারজনই নন, ভোট দিতে হাজির গোটা ২৬ জনের পরিবার। ভোটের লাইনে দাঁড়ানো থেকে ভোট দিয়ে বেরিয়ে আসা ইস্তক তাঁদের ফুর্তি দেখে কে? রীতিমতো উৎসবের মেজাজেই ‘বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের উৎসব’-এ শামিল হল এই পরিবার। হয়তো বা ভোটদানে উৎসাহীর প্রচারে নির্বাচন কমিশনের ‘আইডল’ হতে পারত এই পরিবার। বুথের বাইরে বেরিয়ে তুললেন দেদার সেলফি। এক ফ্রেমে তিন প্রজন্ম। শুক্রবার সকালে এ ঘটনার সাক্ষী হল জলপাইগুড়ি রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ের বুথ।
জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ক্লাব রোডের মাঝি পরিবার প্রতিটি ভোটেই দল বেঁধে ভোট দিতে আসে। শুক্রবারও তেমনটি এসেছিলেন তাঁরা। পরিবারের মোট সদস্য ২৭। তবে ভোট দিলেন ২৬ জন। শেষজন পরের ভোটে দলে ভিড়বেন। এদিন ২৬ জনই একসঙ্গে এসে লাইনে দাঁড়ান। পরিবারে এখনও অবধি সবচেয়ে বেশিবার ভোট দিয়েছেন দুই প্রবীণা বাসমতী মাঝি আর পুতুল মাঝি। দুজনের বয়স প্রায় ৯০-এর কোটায়। তাঁরা সম্পর্কে জা।
পরিবারে গত দু’বছর ধরে বাড়ছে নয়া ভোটার। প্রবীণাদের নাতনি পূজা ২০১৯-এর বিধানসভা নির্বাচনে প্রথম ভোটাধিকার পান। আর এবার পেয়েছে ডলি। এবার তাঁরাও পরিবারের সঙ্গে বুথে হাজির। সকাল সাড়ে ন’টায় জলপাইগুড়ি রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ের বুথে ভোটারদের ভিড়। এখানকার বুথগুলিকে মডেল বুথ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ফলে বুথে ঢোকার মূল গেট থেকে ভিতর সবটাই সুসজ্জিত। ভোট দিয়ে বেরিয়ে পুতুল মাঝিকে মধ্যমণি করে সবাই আনন্দের মুহূর্ত সেলফি-বন্দিতে ব্যস্ত। কমিশন প্রবীণ ভোটারদের বাড়ি বসেই ভোটদানের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু এব্যাপারে পরিবারটির সঙ্গে নাকি কেউ যোগাযোগ করেনি বলে দাবি করা হয়। তবে বাড়ি বসে ভোট দিতে নারাজ দুই প্রবীণা বাসমতী মাঝি ও পুতুল মাঝি। পুতুলদেবীর প্রশ্ন, ‘আমরা এখনও দিব্যি হেঁটেচলে বেড়াচ্ছি। কেন বাড়ি বসে ভোট দেব? বুথে এসে ভোট দেওয়ার আলাদা অনুভূতি। নাতনি ডলি এবার প্রথম ভোট দিচ্ছে। ঠাকুমা নাতনিতে একসঙ্গে ভোট দিতে এসেছি। এর থেকে বড় আনন্দের আর কী হতে পারে।’ প্রথম ভোটার ডলি বলেন, ‘যেহেতু প্রথম ভোট, তাই আলাদা আনন্দ ছিল। আর পরিবারের সবচেয়ে প্রবীণ আর সবচেয়ে নবীণ ভোটারের একসঙ্গে বুথে যাওয়ার একটা আলাদা অনুভূতি হয়। ঠাকুমার সঙ্গে জীবনের প্রথম ভোট দেওয়ার মুহূর্তটা স্মৃতি হয়ে থাকবে।’ পরিবারের বাপ্পা মাঝি বলেন, ‘আমরা মোট ২৭ জন। এর মধ্যে ২৬ জনই ভোটার। আগামী বছর আরও একজন নয়া ভোটার জুড়বে। আমরা তিন প্রজন্ম একসঙ্গে ভোট দিয়েছি। এটা ভীষণ আনন্দের।’