বালুরঘাটঃ একেই বোধ হয় বলে মরেও শান্তি নেই। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাথমিক স্কুলের এক সহকারি শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে প্রায় চার মাস আগে। পরিবারের তরফে বিষয়টি লিখিত আকারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু গত সপ্তাহে প্রকাশিত ভোটকর্মীর তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে। সেকেন্ড পোলিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রয়াত ওই শিক্ষককে। মৃত্যু পরবর্তী সুযোগসুবিধা পাওয়ার পরিবর্তে ভোটকর্মীর তালিকায় নাম ওঠায় বিপাকে পড়েছেন ওই শিক্ষকের পরিবার। তালিকা থেকে নাম কাটানোর জন্য তঁারা সরকারি দপ্তরে ছোটাছুটি করতে হচ্ছে তঁাদের। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো শোরগোল পড়েছে বালুরঘাট শহরে।
মৃত ওই স্কুলশিক্ষকের নাম নির্মাল্য গুহ। বালুরঘাট শহরের অভিযাত্রী বিদ্যানিকেতন প্রাথমিক স্কুলে তিনি দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতা করেছে। প্রায় মাস চারেক আগে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। চিকিৎসা করেও শেষরক্ষা হয়নি। মারা যান ওই শিক্ষক। এরপরেই পরিবারের তরফে মৃত্যু পরবর্তী সরকারি সুযোগসুবিধার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়। সেই ফাইলের কাজ এখনও শেষ হয়নি। তার আগেই ভোটকর্মীর তালিকায় তঁার নাম দেখে চক্ষু ছানাবড়া একসময়ের সহকর্মী থেকে শুরু করে পরিবারের সকলের।
গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ইস্যু করা ভোটের প্রশিক্ষণ তালিকায় এই ত্রুটি নজরে পড়েছে ওই মৃত শিক্ষকের পরিবারের। বালুরঘাট সদর সার্কেলের তিনি প্রাথমিক শিক্ষক ছিলেন। এসআই দপ্তরের প্রকাশ করা তালিকার ষষ্ঠ নম্বরে সেকেন্ড পোলিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তঁাকে। বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন মৃত শিক্ষকের স্ত্রী ও পুত্র।
মৃত ওই প্রাথমিক শিক্ষকের স্ত্রী শম্পারানী দাস গুহ বলেন,‘ গত বছর নভেম্বর মাসে ১৭ তারিখ স্বামী গত হয়েছেন। তার চারদিন পরেই অবর প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদে তঁার বেতন বন্ধ করে দেওয়ার চিঠি পাঠিয়েছিলাম। প্রশাসনের গাফিলতিতে এভাবে মৃত ব্যক্তির নামে ভোটের ডিউটি এসেছে। এখন আমি ও ছেলে নির্বাচনি দপ্তর ও শিক্ষা সংসদ সহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরছি।’
দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা শাসক বিজিন কৃষ্ণা জানান, ‘স্কুল থেকে যেমন রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে, সেই হিসেবে ভোটের ডিউটি নির্ধারণ করা হয়। তিনি যদি মারা গিয়ে থাকেন, তাহলে সেই নাম কাটা যাবে।’
যদিও স্কুলের টিআইসি অমিত সাহা বলেন, ‘এখানে স্কুলের কোনও বিষয় নেই। শিক্ষা দপ্তরের এসআই অফিস থেকেই সমস্তটা ঠিক করা হয়।’