রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: পাহাড়ের প্রতিটি বুথ থেকেই জোট প্রার্থী গোপাল লামাকে (Gopal Lama) লিড দিতে হবে। নয়তো ভোটের (Loksabha election) পরে দলের পদ কেড়ে নেওয়া হবে। ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার (বিজিপিএম) সভাপতি তথা গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) চিফ এগজিকিউটিভ অনীত থাপা (Anit Thapa) সোমবার কালিম্পংয়ে গিয়ে এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন। তিনি বলেন, ‘এই ভোট আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আগামী দু’মাস আমাদের সবার কাছেই অ্যাসিড টেস্ট। কার্সিয়াংয়ের সিটং এলাকা থেকে যদি প্রার্থীকে লিড দিতে না পারি তাহলে আমিও ব্যর্থতা মেনে সরে যাব।’ প্রসঙ্গত, জিটিএ ভোটে সিটং থেকে জয়ী হয়ে অনীত থাপা সংস্থার চিফ এগজিকিউটিভ হয়েছেন। অনীতের এই হুঁশিয়ারির পরে পাহাড়ে দলের অন্দরে হইচই পড়েছে।
পাহাড়ের পঞ্চায়েত, জিটিএ (GTA) পুরোপুরি বিজিপিএমের দখলে। দার্জিলিং, কার্সিয়াং, কালিম্পং সর্বত্রই বিজিপিএম দলীয় সংগঠনকে যথেষ্ট শক্তিশালী করেছে। যার জেরে গত দু’বছরে বিভিন্ন ভোটে সাফল্য এসেছে। এবার লোকসভা ভোট।
২০০৯ সাল থেকে বিজেপির দখলে থাকা দার্জিলিং লোকসভা আসন এবার ছিনিয়ে নেওয়াকেই তৃণমূল কংগ্রেস পাখির চোখ করেছে। আর সেই লক্ষ্য পূরণে অনীত থাপা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম ভরসা। পাহাড়ে বিজেপির একচ্ছত্র আধিপত্যের দিন শেষ হয়ে এসেছে, রাজ্যের শাসকদলের এমনটাই ধারণা। ফলে গত তিন-চারটি লোকসভা ভোটের মতো এবার পাহাড়ে একপেশে ভোট হবে না বলেই রাজনৈতিক মহলও মনে করছে।
অনীত এদিন কালিম্পংয়ে দলের যুব সংগঠনের সভায় অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আগের মতো ভোট এবার হবে না। পঞ্চায়েত আমাদের, জিটিএ আমাদের। প্রত্যেকটি সমষ্টিতে আমাদের শক্তিশালী সংগঠন রয়েছে। তাই এবার আমাদের জিততেই হবে।’ এর পরেই অনীত বলেন, ‘পাহাড়ের প্রতিটি সমষ্টি, প্রতিটি বুথ থেকে গোলাপ লামাকে ভোটে লিড দিতে হবে। এটা একরকম বাধ্যতামূলক। যে সমস্ত বুথের ফলাফল ভালো হবে না, সেখানকার নেতৃত্বকে ভোটের পরে সরিয়ে দেওয়া হবে।’ শুধু দলের নেতানেত্রীদেরই নয়, রীতিমতো দলের টিকিটে জয়ী জিটিএ’র সভাসদ, পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যদেরও অনীত একইভাবে সতর্ক করেছেন। পাশাপাশি মিটিং-মিছিলের চেয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারের উপরেও তিনি জোর দিয়েছেন।
দলীয় সূত্রের খবর, কালিম্পংয়ের কিছু এলাকায় দলের সংগঠন দুর্বল রয়েছে। যে কারণে পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি এবং বিরোধীরা কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু আসন দখল করেছিল। সেই এলাকার নেতৃত্বকে চাপে রাখতেই তিনি এই মন্তব্য করেছেন।