হেমতাবাদ: ক্রমে হারাচ্ছেন দৃষ্টিশক্তি। বহু চিকিৎসা করেও কোনও কাজ হয়নি। হেমতাবাদ থানার সমসপুরের বাসিন্দা মোকলেসা বেগম(১৯)। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের বাংলা অনার্সের ছাত্রী তিনি। বাবা রেজাউল হক নিরুদ্দেশ। মা মোসলেমা বিবি দিনমজুরের কাজ করেন। ডান চোখের দৃষ্টিশক্তি ইতিমধ্যে পুরো হারিয়ে গিয়েছে মোকলেসা বেগমের। বা চোখে একটু আধটু দেখতে পান। দীর্ঘ বছর ধরে চিকিৎসা করেও ফেরেনি চোখের আলো। অসহায় মা মেয়েকে সুস্থ করতে কর্নিয়ার খোঁজে হন্নে হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন। মেধাবী পড়ুয়াকে কেউ চোখ দান করলে আবার তিনি ফিরে পাবেন দৃষ্টিশক্তি। এই আশায় ব্যাকুল মা।
মেয়ের চোখের চিকিৎসায় নেপাল পর্যন্তও ঘুরেছেন মোসলেমা বিবি। কিন্তু চোখ প্রতিস্থাপনই একমাত্র বিকল্প রাস্তা। এমনটাই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এই অবস্থায়ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার অভ্যাস ছাড়েননি আত্মবিশ্বাসী মোকলেসা বেগম। প্রখ্যাত শিল্পী বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়ের মতো ছবি আকার অনুশীলনও থমকে যায়নি তাঁর। যন্ত্রণাকে জয় করার জেদ অটুট তাঁর।
এবিষয়ে চক্ষু বিশেষজ্ঞ কমল সরকার জানিয়েছেন, শিলিগুড়িতে যুবতীর নাম যাতে নথিভুক্ত হয় সেই ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে। চোখ সংগ্রহ হলে প্রতিস্থাপনের সমস্যা হবে না। খবরটা মোকলেসা বেগমের কানে পৌঁছোতেই পরিতৃপ্তির হাসি হেমতাবাদের যুবতীর। কিন্তু কে আলো ফেরাবে জানেন না তিনি। তাঁর বক্তব্য, অভাবের সংসারে রায়গঞ্জ ও হেমতাবাদের বিভিন্ন এলাকায় ধুপকাঠি বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করেন। বিশ্ববাংলা প্রতিবন্ধী সংগঠনের তরফেও পড়াশোনার খরচ দেওয়া হয়। তাঁর ইচ্ছে অধ্যাপক হওয়ার। তবে সে ইচ্ছা শেষ অবধি পূরণ হবে কিনা, সেই আশায় বুক বাঁধছেন যুবতী।