গাজোলঃ স্থানীয় এক মহিলার সঙ্গে স্বামীর অবৈধ সম্পর্কের জেরে সংসারে ছিল চরম অশান্তি। মাঝে ওই মহিলাকে নিয়ে পালিয়ে যান স্বামী। মাস তিনেক পর ফিরে আসে। গ্রামের সালিশি সভায় আগামী দিনে এই ধরনের কাজ আর হবে না বলে স্বীকার করেন দুজনেই। কিন্তু কয়েক দিন ঠিক থাকার পর আবার ঘনিষ্ঠতা বাড়ে সম্পর্কে। সহ্য করতে না পেরে গতকাল রাতে আত্মঘাতী হন ওই গৃহবধূ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকায়।
জানা গেছে আত্মঘাতী ওই মহিলার নাম রঞ্জনা রবিদাস (৩৭)। স্বামীর নাম বিহারী রবিদাস। বাড়ি গাজোলের মশাল দিঘি সংলগ্ন শ্যামনগর এলাকায়। এদিন ওই গৃহবধূর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় গাজোল থানার পুলিশ। ঘটনায় বাবা এবং প্রতিবেশী মহিলার নামে গাজোল থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছে মৃতার মেয়ে রুবি দাস।
আত্মঘাতী ওই মহিলার মেয়ে রুবি দাস বলেন, আমার বাবার সঙ্গে এলাকার এক গৃহবধূর অবৈধ সম্পর্ক ছিল। এই নিয়ে পরিবারে অশান্তি লেগেই ছিল। মাঝখানে ওই গৃহবধূকে নিয়ে আমার বাবা পালিয়ে গিয়েছিল। প্রায় দুই তিন মাস বাইরে থাকার পর আবার বাড়ি ফিরে আসে। এলাকায় সালিশি সভা বসে সেই বিষয়ে মীমাংসা হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যে যার বাড়িতে চলে যাবে এবং মন দিয়ে সংসার করবে। মাঝখানে সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু কিছুদিন পর আবার শুরু হয় সেই সম্পর্ক। বিষয়টি জানতে পেরে মা-বাবাকে সাবধান করে দেয়। এরপরই জানা যায় আমার বাবা, ওই মহিলা এবং মহিলার স্বামী সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা ভিন রাজ্যে কাজে যাবে। স্বাভাবিকভাবেই এতে আমার মা বাবাকে বাধা দেয়। এই নিয়ে সংসারে অশান্তির সৃষ্টি হয়। অবশেষে অশান্তি সহ্য করতে না পেরে আমার মা গতকাল রাতে নিজের শোয়ার ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়।
খবর পেয়ে আমরা ছুটে যাই। খবর দেওয়া হয় গাজোল থানার পুলিশকে। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে গাজোল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। রুবির দাবি, “আমার মায়ের আত্মহত্যার জন্য দায়ী আমার বাবা এবং ওই মহিলা”। আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ জানিয়ে ওই দুজনের নামে গাজোল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করছি। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে এদিন মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হচ্ছে।