রায়গঞ্জ: বয়স ১০০। প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ কিমি হেঁটে হাট বাজার করেন। মামলা মোকদ্দমার কারণে মাঝেমধ্যে রায়গঞ্জেও আসেন। উনি আর কেউ নন ইটাহারের গুলন্দরের বাসিন্দা লুৎফর হক। পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে স্ত্রী রাবেয়া বিবিকে নিয়ে মেজো ছেলে ইউসুফ আলির কাছেই থাকেন। বয়স ১০০ হলেও বাড়ির সমস্ত কাজকর্ম করেন, এমনকি হাট বাজারও করেন। কৃষিজীবী পরিবারের সন্তান, তাই পড়াশোনা বেশিদূর এগোয়নি। ছেলেরা সবাই কৃষি কাজ করেন।
বয়সের টানে তার স্মৃতি খেই হারায়নি। স্মৃতিতে আজও জ্বলজ্বল করে ছোটো বেলার কথা। লুৎফর সাহেব জানান, খুব কষ্ট করে বড় হয়েছি। ছেলেরাও খুব কষ্ট করেছে। তাই কষ্টের দিনগুলি ভুলতে পারি না। মেজো ছেলের কাছে থাকলেও নিজেই হাট বাজার করেন। হেঁটেই যাতায়াত করেন।
প্রতিদিনই ভোর চারটেয় উঠে পড়েন লুৎফর হক। খানিকটা হাঁটাহাঁটির পর চা মুড়ি খেয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে বাড়ির কিছু কাজ সারেন। অনেকগুলি দাঁত পড়ে গেছে। কানে শোনেন ঠিকঠাক। স্মৃতির খাতা উলটে স্বাধীনতার আগের কথা গ্রামের মানুষকে শোনান। লুৎফর সাহেব বলেন, অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করলেও ছোটো বেলায় গরুর দুধ খেয়েছেন। ছেলে বেলায় খাওয়া অতো দুধ খাওয়াই সুস্থ থাকার কারণ। এলাকার মানুষ শতায়ু এই প্রবীণকে যথেষ্ট সমীহ করেন। গুলন্দর গ্রামের ইংরেজি শিক্ষক মহম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘আমাদের গ্রামে শতায়ু মানুষ খুঁজলে পাওয়া যাবে না। ই লুৎফর জ্যাঠাকে আমরা খুব ভালোবাসি। আমাদের মাঝেমধ্যে স্বাধীনতার আগের গল্প শোনান। ইংরেজ আমলের অত্যাচারের অনেক কথাই জেনেছি।’