রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: পুজোর আগেই সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের (এসটিপি) মাধ্যমে পরিশোধন হবে শহরের নিকাশিনালার জল। অন্তত ৩৫ শতাংশ নিকাশির জল পরিশোধন করবে এসটিপি-৩। সেখান থেকে ২০ শতাংশ জল ব্যবহার করা হবে শহরের রাস্তা পরিষ্কার এবং গাছে দেওয়ার কাজে। অন্যদিকে, আগামী বছরের জুনের মধ্যেই এসটিপি-২ চালু করে দেবে কলকাতা মেট্রোপলিটান ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। মঙ্গলবার কেএমডিএ এবং শিলিগুড়ি পুরনিগমের কর্তাদের ভিডিও কনফারেন্সে এমনটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্যদিকে, এসটিপিএ-১’এর জন্যও জলপাইগুড়ি জেলায় জমি দেখা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে পুরনিগমের যৌথ পরিদর্শন হবে বলে জানা গিয়েছে।
বুধবার এসটিপি-২ এবং ৩’এর কাজ দেখতে যাবেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেখান থেকে তাঁর শহরের দ্বিতীয় জলপ্রকল্প দেখতে যাওয়ার কথা রয়েছে। শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবের বক্তব্য, ‘এসটিপি-২’এর পাইপলাইন বসানোর কাজে একটু সময় লাগছে। তাই আগে এসটিপি-৩ চালু করে দেওয়া হচ্ছে। পরের বছর জুনের মধ্যে এসটিপি-২ চালু হয়ে যাবে। আমরা দুটি এলাকায় প্রচুর গাছ লাগাব। অনেক ফলের গাছ লাগানো হচ্ছে।’
শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) ২০০ কোটি টাকা দুর্নীতির জেরে বন্ধ হয়ে যায় মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানের কাজ। এই মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানের (Mahananda action plan) মধ্যেই এসটিপিগুলি তৈরি হয়েছিল। শহরের যত নিকাশিনালার জল রয়েছে সেগুলি পাইপলাইনের মাধ্যমে সোজা চলে যাবে এসটিপিতে। এরপর সেখানে জলগুলি পরিশোধন করে ফেলা হবে মহানন্দায়। মূলত মহানন্দার দূষণ রোধেই এই মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যান হাতে নেওয়া হয়েছিল। সেই কাজ শুরু হয়ে প্রথমে নৌকাঘাট এলাকায় একটি এসটিপি তৈরি হয়। পুকুর তৈরি করে যন্ত্রও বসিয়ে ফেলা হয়। শুধু পাইপলাইন বসানোর কাজ বাকি ছিল। এই পরিস্থিতিতে এসজেডিএতে আর্থিক দুর্নীতি হওয়ায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। শিলিগুড়ি পুরনিগমে তৃণমূল বোর্ড ক্ষমতায় আসার পর নতুন করে কাজ শুরু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেইমতো কেএমডিএ-র হাতে কাজ হস্তান্তর করে রাজ্য সরকার।
এসটিপি-১ তৈরি করার জন্য প্রায় ২৫০ কোটি টাকা এবং এসটিপি-২ ও ৩’এর জন্য প্রায় ১৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। এই টাকায় এসটিপি-২’এর পাইপলাইন বসানো, এসটিপি-৩ তৈরির কাজ হবে। সেইমতো ফুলবাড়ি এলাকায় এসটিপি-৩’এর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এসটিপি-২’এর পাইপলাইন বসানোর জন্য সেচ দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে সমীক্ষা শুরু হয়েছে। এসটিপি-১’এর জন্য শিলিগুড়ি শহরের সংলগ্ন এলাকায় জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে জায়গা দেখার কাজ চলছে। একটি জায়গা পুরনিগম এবং জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন স্থির করেছে বলে জানা গিয়েছে। সব ঠিক থাকলে ওই এলাকাতেই এসিটিপি-১’এর কাজ শুরু হবে।