নয়াদিল্লি: এথিক্স কমিটির রিপোর্টে পড়ল চূড়ান্ত সিলমোহর। বাতিল হল মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ। ক্যাশ ফর কোয়ারি কাণ্ডে মহুয়া মৈত্রকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হল। ক্যাশ ফর কোয়ারি কাণ্ডে এদিন লোকসভায় মহুয়ার সদস্যপদ খারিজের দাবিতে প্রস্তাব পেশ করা হয়। তারপর সেই প্রস্তাবের উপর আধ ঘণ্টা আলোচনার অনুমতি দেন স্পিকার। স্পিকার ওম বিড়লা জানান, সংসদের মর্যাদা রক্ষায় কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। গণতন্ত্রে কখনও এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়, যা দুর্ভাগ্যজনক। সংসদের মর্যাদার সঙ্গে কোনওভাবে আপোস নয়। তবে আলোচনার জন্য বাড়তি সময় দাবি করেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের আর্জি মেনে বাড়তি সময়ও দেন স্পিকার। কিন্তু আত্মপক্ষ সমর্থনে এদিন মহুয়া মৈত্রকে সংসদে বলার সুযোগ দেননি স্পিকার।
‘ক্যাশ ফর কোয়ারি’ মামলায় এদিন মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে রিপোর্ট পেশ করে লোকসভার এথিক্স কমিটি। শুক্রবার দুপুর ১২টায় এথিক্স কমিটির রিপোর্ট পেশ করেন কমিটির প্রধান তথা বিজেপি সাংসদ বিজয় সোনকার। এরপরই হট্টগোল শুরু হয়ে যায়। এর জেরে অধিবেশন দুপুর ২টা পর্যন্ত মুলতুবি করে দেওয়া হয়। এদিন এথিক্স কমিটির রিপোর্ট পেশ হতেই কার্যত ঝড় ওঠে লোকসভায়। মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়ে সরকার বিরোধী স্লোগান দেওয়া শুরু করেন তৃণমূল সাংসদরা। পাশে দাঁড়ান ইন্ডিয়া জোটের শরিকরাও। তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় আবেদন করেন, ওই রিপোর্টের কপি সব সাংসদদের হাতে যাওয়ার পর সেটা নিয়ে আলোচনার জন্য অন্তত ৪৮ ঘণ্টা সময় দিতে হবে। তারপর সেটা নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা করতে হবে। মহুয়াকেও বলার সুযোগ দিতে হবে। কিন্তু তৃণমূলের আবেদন সত্ত্বেও এদিন মহুয়াকে বলার সুযোগ দেননি স্পিকার।
এদিকে মহুয়াকে বলতে না দেওয়ায় তৃণমূলের তরফে বলতে শুরু করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, আগে কী হয়েছে, তা এখন যুক্তি হতে পারে না। সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে তিনি জানান, দর্শন হিরানন্দানির বয়ানই নেওয়া হয়নি। এথিক্স কমিটির সুপারিশ নিয়ে প্রশ্ন তোলে কংগ্রেসও। বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরী প্রশ্ন করেন, ‘এত তাড়াহুড়ো কেন? এত তাড়াহুড়ো করে রিপোর্ট পড়া কি সম্ভব? আত্মপক্ষ সমর্থনে সুযোগ দেওয়া হয় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তকেও। মহুয়াকে কেন বলার সময় দেওয়া হবে না?’। এদিন সংসদ থেকে বেরিয়ে আসার পর ক্ষোভ প্রকাশ করেন মহুয়া মৈত্র।