উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ মেলায় যাওয়া মানেই বন্দুক দিয়ে বেলুন ফাটানো। সেটা ছিল মেয়েটির নেশা। বন্দুক তাক করে নিখুঁত নিশানা ভেদ করে কত কিছুই না জিতে নিয়ে ঘরে ফিরত সে। সেই মেয়েটি বৈদ্যবাটির মেহুলি ঘোষ। বৈদ্যবাটির অলিগলি থেকে চায়ের দোকান সর্বত্রই একটাই আলোচনা তাঁদের ঘরের মেয়ে মেহুলি যাবেন অলিম্পিকে। শনিবার রাতে আজারবাইজানের বাকুতে মেয়েদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেল বিভাগে ব্যক্তিগত ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জিতেছেন মেহুলি। এই জয়ের সঙ্গে সঙ্গে প্যারিস অলিম্পিক্সে দেশের জন্য একটি টিকিট পাকা করে ফেলেছেন বাংলার শুটার। এই খবরে যারপরনাই খুশি মেহুলির পরিবার। অভিনব বিন্দ্রার অলিম্পিক্স পদক জয় দেখেই ওঁর শুটিংয়ে আগ্রহ তৈরি হয় বলে জানিয়েছেন মেহুলির বাবা নিমাই ঘোষ।
বৈদ্যবাটির স্যাক্রেড হার্ট স্কুল থেকে শুরু লেখাপড়ার পাঠ। তার পর চুঁচুড়ার একটি নামী ইংরাজি মাধ্যম স্কুল থেকে দ্বাদশ কমপ্লিট করার আগেই কমনওয়েলথ আর শুটিং বিশ্বকাপের জন্য ক্যাম্পে চলে যান মেহুলি ঘোষ। চাকরি সূত্রে মেহুলির এখন ঠিকানা হায়দরাবাদ। আজারবাইজানের বাকুতে মেয়েদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেল বিভাগে অংশ নিয়েছিলেন মেহুলি। ব্যক্তিগত ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জিতেছেন মেহুলি। আর এই পদক জয়ের ফলেই অলিম্পকে জায়গা করে নিয়েছেন বাংলার এই শ্যুটার। মেহুলির মা মিতালি ঘোষ বলেন, ‘‘ইউটিউবে লাইভ দেখছিলাম। যখন ও ব্রোঞ্জ মিট করল, অলিম্পিক্স নিশ্চিত হল, তখন আমি আর ওর বাবা কেঁদে ফেলেছিলাম। অনেক লড়াই করে মেয়েটা আজকে এই জায়গায় পৌঁছেছে। আশা করি সকলের আশীর্বাদ নিয়ে ও পারবে।’’
প্যারিস অলিম্পিক্স যাওয়া এখনও নিশ্চিত নয় বলে মনে করছে ওয়েস্ট বেঙ্গল রাইফেল শুটিং অ্যাসোসিয়েশন। এখনও বেশ কয়েকমাস বাকি আছে অলিম্পিকের। সেই সময় ভারতীয় শুটারদের মধ্যে ক্রমতালিকায় শীর্ষে যারা থাকবেন তারাই সুযোগ পাবেন অলিম্পিক্সে। তবে মেহুলির সেই সম্ভাবনা যথেষ্ট বলেই মনে করছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল রাইফেল শুটিং অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল দেবকুমার সামন্ত। দেবকুমার বলেন, ‘‘মেহুলির পারফরমেন্স তলানিতে এসে ঠেকেছিল। নিজের দুর্বলতা শুধরে কাম ব্যাক করেছে, তা উদাহরণযোগ্য। আমরা আশাবাদী ধারাবাহিকতা রেখে ও অলিম্পিক্স পর্যন্ত যাবেই।’’
মেহুলির সাফল্যে নিয়ে উচ্ছ্বসিত বৈদ্যবাটি। চাঁপদানির বিধায়ক অরিন্দম গুঁই বলেন, ‘‘গোটা শহর মেহুলির জন্য গর্বিত। আশা করব অলিম্পিক্সে পদক জিতে বৈদ্যবাটিকে বিশ্ব ক্রীড়ায় স্থান দেবেন মেহুলি। সুযোগ পাওয়া গেলে মেহুলিকে আমরা রাজকীয় নাগরিক সংবর্ধনা দেব প্যারিস যাওয়ার আগে।’’