কালিয়াচকঃ বলেছিল ইদের আগেই বাড়ি ফিরে আসবে। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হল না। ফিরল তাঁর কফিনবন্দি দেহ। ফের ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে মৃত্যু হল কালিয়াচকের এক পরিযায়ী শ্রমিকের। কাজ করার সময় অসুস্থ হয়ে পড়লে পুনের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। সোমবার দুপুর নাগাদ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত শ্রমিকের নাম নাসিমুল নাদাব (৩৪)। কালিয়াচকের সুজাপুর পঞ্চায়েতের স্কুলপাড়ার বাসিন্দা নাসিমুল। তাঁর স্ত্রী ছাড়াও রয়েছে দুটি নাবালক সন্তান।
গত দুই মাস আগে পুনে কাজে গিয়েছিলেন নাসিমুল। তাঁর ইচ্ছে ছিল বাড়তি রোজগার করে সন্তানদের মুখে হাসি ফোটানো। ইদে পরিবারের সঙ্গে ভালোভাবে কাটানোর জন্য বাড়তি রোজগারের আশায় পুনে গিয়েছিলেন মিস্ত্রির সঙ্গে ফ্রাঞ্চির কাজ করার জন্য। সোমবার সকলের সঙ্গে যথারীতি কাজ করতে যান তিনি। কাজ শুরুও করেন। কাজ করার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সহকর্মীরা তাঁকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু দুপুর ১২ টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর বাড়িতে এসে পৌঁছাতেই শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবার সহ এলাকায়। মৃতদেহ বাড়িতে ফিরিয়ে আনার জন্য তোড়জোড় শুরু করে পরিবারের লোকজন। ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে বাড়িতে ফিরিয়ে আনার অনুরোধ জানানো হয়। মঙ্গলবার বিকেলে বাড়িতে এসে পৌঁছায় নাসিমুল নাদাবের মৃতদেহ। গ্রামে অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে গোটা গ্রাম। শেষ দেখা দেখতে ভিড় জমান গ্রামবাসী।
মৃতের দাদা শুকরুদ্দিন নাদাব জানান, ‘নাবালক ছেলেমেয়ে রেখে দুই মাস আগে পুনেতে কাজ করতে গিয়েছিল আমার ভাই। সোমবার দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার বিকেলে মৃতদেহ বাড়িতে এসে পৌঁছায়। রাতের মধ্যেই কবরস্থ করা হবে। তাঁর নাবালক দুটি সন্তান রয়েছে।’
মৃতের স্ত্রী ফাতেমা বিবি বুক ভাঙা কান্না নিয়ে বলেন, ‘আমার সব শেষ হয়ে গেল। আমার দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। কেমন করে তাঁদের মানুষ করব। আমার স্বামী ইদে আসতে চেয়েছিল। কিন্তু কী হতে এসব কী হয়ে গেল। আমি এখন কী করব কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।’